গাছ বাওয়া আর কষ্ট নয়, এবার স্কুটার নিয়েই উঠে পড়া যাবে গাছের চূড়ায়। গাছে ওঠার ব্যতিক্রমী ‘ক্লাইম্বিং স্কুটার’ বানিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন ভারতের কর্নাটক রাজ্যের এক খামারি। ফল পাড়া সহজ করতেই এই প্রযুক্তি উদ্ভাবনের পরিকল্পনা করেন তিনি। দীর্ঘ ৮ বছর গবেষণা শেষে মেলে সফলতা। বাণিজ্যিকভাবে এখন তৈরি হচ্ছে এই স্কুটার। গাছে ওঠার ব্যতিক্রমী এই যান তৈরি করে গণপতি ভাট ঠাঁই করে নিয়েছেন রয়টার্সসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে।
খামারি গণপতির রয়েছে বিশাল সুপারি ও নারকেলের বাগান। গাছে উঠে ফল পাড়া বা কীটনাশক দেয়ার ভোগান্তি থেকেই এমন প্রযুক্তি উদ্ভাবনের পরিকল্পনা করেন তিনি।
গণপতি জানান, আমাদের এলাকায় শ্রমিক পাওয়া যায় না। মজুরিও অনেক বেশি। বিশেষ করে বর্ষাকালে গাছে ওঠা খুব কষ্টসাধ্য। এসব সমস্যা সমাধানেই সুপারি গাছে ওঠার এই স্কুটার বানিয়েছি।
ক্লাইম্বিং স্কুটার দিয়ে অনায়াসে গাছে ওঠার দৃশ্য যতটা আনন্দদায়ক; উদ্ভাবনের পথটা ততটা মসৃণ ছিল না গণপতির জন্য। আট বছর পরিশ্রমের ফল এই স্কুটার। সব মিলিয়ে খরচা করেছেন কমপক্ষে ৪০ লাখ রুপি। ছিল সামাজিক নানা প্রতিবন্ধকতাও।
গণপতি ভাট আরও জানান, শুরুর দিকে যখন স্কুটারটা বানানোর চেষ্টা করছিলাম, তখন বাড়ির সবাই চিন্তা করতো, স্কুটারসহ যদি উপর থেকে পরে যাই! গ্রামের সবাই আমাকে পাগল ভাবতো। ব্যাপারটা কোনোভাবেই মানতে পারতো না তারা। অনেকে নিশ্চিতও ছিল যে, আমি সফল হবো না।
গণপতির এই সফলতায় খুশিতে আত্মহারা পুরো পরিবার। তার স্ত্রী জয়লক্ষ্মী ভাট জানান, আমি ভীষণ ভয় পেতাম। ও যা করছে সেটা আদৌ কাজে আসবে তো? যা ইনকাম করতো তার বেশিরভাগই এই স্কুটার তৈরির পেছনে ব্যয় করতো। মনে হতো শুধু শুধু টাকা আর সময় দুই’ই নষ্ট করছে। কিন্তু ওর সফলতায় এখন আমি বেজায় খুশি।
ক্লাইম্বিং স্কুটার ব্যবহার করে দিনে অন্তত ৩শ’ গাছে উঠে ফল সংগ্রহের কাজ করা সম্ভব। প্রযুক্তিটিকে আরও উন্নত করতে গবেষণা চালাচ্ছেন গণপতি। তার ব্যতিক্রমী এ উদ্ভাবনকে ছড়িয়ে দিতে কাজ করছে একটি প্রকৌশল কোম্পানি। এখন পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে ৩শ’ স্কুটার। প্রতিটি স্কুটারের দাম ৬০ হাজার রুপি।
আরও পড়ুন: যুদ্ধ বন্ধের যে চারটি শর্ত দিলো রাশিয়া
ইউএইচ/
Leave a reply