১৩ বছর আগে করা মামলায় পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির ১৬ নেতা-কর্মীর কারাদণ্ড

|

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় জাহাঙ্গীর হোসেন মুকুল নামে এক ব্যক্তিকে অপহরণে ও পরে শ্বাসরোধ করে হত্যার ঘটনায় পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির ১৬ নেতাকর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (২১ মার্চ) দুপুরে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. তাজুল ইসলাম এ রায় দেন। আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অনুপ কুমার নন্দী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।

আমৃত্যু সশ্রম কারাদণ্ডপ্রাপ্ত তিনজন হলেন- দৌলতপুর উপজেলার শালিমপুর গ্রামের সোহেল রানা, একই গ্রামের ওয়াসিম রেজা ও ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার কাটদাহ গ্রামের মানিক জোয়ার্দার। তবে ওয়াসিম রেজা ও মানিক জোয়ার্দার পলাতক রয়েছেন। এছাড়া এই তিনজনকে ২৫ হাজার করে টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।

এই মামলায় যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডপ্রাপ্ত সাতজন হলেন- কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার মশান গ্রামের ইদ্রিস, মশান কেত্তপুর এলাকার খন্দকার তৈমুল ইসলাম বিপুল ও শালিমপুর গ্রামের ফারুক চেয়ারম্যান। বাকি চারজন হলেন- কুষ্টিয়া সদর উপজেলার চৌড়হাস মতি মিয়ার রেলগেট এলাকার উল্লাস খন্দকার, মনির ও কুষ্টিয়া শহরের পূর্ব মজমপুর এলাকার বিপুল চৌধুরী। আরেকজন হলেন- দৌলতপুর উপজেলার পচা ভিটা গ্রামের মোজাহার মোল্লার ছেলে আব্দুল মান্নান মোল্লা। একই সঙ্গে তাদের ২৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।

মামলায় ছয় আসামি মনির, জসিম, সোহেল, ওয়াসিম, উল্লাস, মানিককে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। আর নফর আলী, আনোয়ার কাদের, জাকির হোসেন, আনোয়ার হোসেন এবং শরিফুল ইসলাম বিপুল নামে পাঁচজনকে খালাস প্রদান করা হয়েছে।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালের ২৩ অক্টোবর জাহাঙ্গীর হোসেন মুকুলকে অপহরণ করে আসামি সোহেল রানা ও ফারুক চেয়ারম্যান। অপহরণের পর ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে আসামিরা। ২৯ অক্টোবর আসামিদের ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। ২৫ নভেম্বর জাহাঙ্গীরকে হত্যা করে আসামিরা। কুষ্টিয়ার তৎকালীন সহকারী পুলিশ সুপার (হেডকোয়ার্টার) আলমগীর হোসেন (বর্তমানে টুরিস্ট পুলিশ হেডকোয়ার্টারে পুলিশ সুপার পদমর্যাদায় কর্মরত) অভিযান চালিয়ে সে সময় এ ঘটনায় জড়িতদের কয়েকজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হন। পরে তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী আলমগীর হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশ আবাদি জমিতে পুঁতে রাখা জাহাঙ্গীরের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া হাসপাতালে পাঠায়। এ ঘটনায় ২০০৯ সালের ২ ডিসেম্বর নিহত মুকুলের বড় ভাই ইলিয়াস কবির বকুল বাদী হয়ে দৌলতপুর থানায় ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০১১ সালের ৩১ মার্চ তদন্তকারী কর্মকর্তা ১৬ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। সাক্ষ্য-প্রমাণ শেষে ২১ মার্চ রায় ঘোষণার দিন ধার্য করা হয়। এ মামলায় ১৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য-প্রমাণ শেষে সোমবার আদালত এ রায় দেন।

জেডআই/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply