শ্রীলঙ্কান রাজনীতিতে রাজপাকসে পরিবারের তিন প্রজন্ম

|

মাহিন্দা রাজাপাকসে ও গোতাবায়া রাজাপাকসে। ছবি: সংগৃহীত

শ্রীলঙ্কান রাজনীতি আর রাজাপাকসে পরিবার যেন মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ। ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা লাভের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক শ্রীলঙ্কার যাত্রা শুরু। সে সময় থেকেই রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করে আসছে রাজাপাকসে পরিবার।

গেল প্রায় ২ দশক ধরে লঙ্কান রাজনীতিতে ছড়ি ঘোরাচ্ছে রাজপাকসে পরিবার। বিদ্রোহী তামিল টাইগারদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে জাতীয় নায়কে পরিণত হওয়া মাহিন্দা রাজাপাকসে দেশটির প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী দুই পদেই দায়িত্ব পালন করেছেন। তারই ছোটভাই গোতাবায়া রাজাপাকসে ছিলেন শ্রীলঙ্কার সবশেষ প্রেসিডেন্ট। আরেক ভাই বাসিল রাজাপাকসে ছিলেন অর্থমন্ত্রী।

লঙ্কান রাজনীতিতে রাজাপাকসে পরিবারের উত্থান ডন অ্যালজিন রাজাপাকসের হাত ধরে। পার্লামেন্ট সদস্য হিসেবে রাজনীতি শুরু করলেও একসময় দায়িত্ব পান মন্ত্রী এবং স্পিকারের। ওই সময়ই রাজনীতিতে আসেন ছেলে মাহিন্দা রাজাপাকসে। একই পথ অনুসরণ করেন বাকি তিন ভাই গোতাবায়া, চমল এবং বাসিল রাজাপাকসে।

রাজনীতির এই ধারা অব্যাহত থাকে তৃতীয় প্রজন্মেও। মন্ত্রীসভায় ঠাঁই হয় মাহিন্দা রাজপাকসের দুই ছেলে নমল এবং জোশিহিদা রাজাপাকসের।

গেল এপ্রিলে শ্রীলঙ্কা জুড়ে জোরালো হতে থাকে রাজাপাকসে পরিবারের বিরুদ্ধে আন্দোলন। মে মাসে তা জনরোষে পরিণত হলে মন্ত্রীসভা থেকে পদত্যাগ করেন রাজাপাকসে পরিবারের ৪ জন। দেশত্যাগ করে পদত্যাগের ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসেও।

তবে বিক্ষোভকারীরা বলেছেন, দুর্নীতি আর লুটপাট চালিয়ে রাজাপাকসে পরিবার শুধু নিজেদের পকেটই ভারী করেছে। তারা নিজেদের জীবনকে আলোকিত করলেও আমরা অন্ধকারে পড়ে আছে তারা। তাই নেমে এসেছে রাজপথে। এই আন্দোলন নির্দিষ্ট কোনো গোষ্ঠীর আন্দোলন নয়। শ্রীলঙ্কার প্রতিটি শ্রেণি-পেশার মানুষ এই বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে।

তামিল বিদ্রোহীদের দমন করে একসময় জাতীয় বীরে পরিণত হন মাহিন্দা রাজাপাকসে। কিন্তু দুর্নীতি-স্বজনপ্রীতি আর অনিয়মের কারণে তার এই জনপ্রিয়তা জনরোষে পরিণত হতে সময় নেয়নি। রাজাপাসকে যুগের অবসানের পর দুর্নীতিমু্ক্ত হয়ে সত্যিকারের গণতন্ত্র ফিরবে এই স্বপ্ন এখন লঙ্কানদের চোখে। সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া।

জেডআই/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply