সফল চন্দ্রাভিযান শেষে ফিরে এলো আর্টেমিস ওয়ান, সাফল্যে সন্তষ্ট বিজ্ঞানীরা

|

ছবি: সংগৃহীত

সফলভাবে শেষ হয়েছে, আবারও চাঁদে মানুষ পাঠানোর মিশনের প্রথম ধাপ-আর্টেমিস ওয়ান। প্রায় ২৬ দিন চাঁদের কক্ষপথে পরিভ্রমণের পর, নিরাপদে পৃথিবীতে ফিরলো ওরিয়ন ক্যাপসুল। এ মিশনকে শতভাগ সফল বলে আখ্যা দিয়েছে নাসা। অর্ধশতকের বেশি সময় পর, আবারও চাঁদের বুকে পদচিহ্ন দেয়ার লক্ষ্যে আরও একধাপ এগিয়ে গেলেন বিজ্ঞানীরা।

ঠিক ২৬ দিন আগে ফ্লোরিডার কেপ ক্যানাভেরাল থেকে আর্টেমিস ওয়ানে চেপে মহাশূন্যের পথে যাত্রা করেছিল ওরিয়ন স্পেসক্র্যাফট। গন্তব্য- পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ চাঁদ। ২০ লাখ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে, চাঁদের কক্ষপথে ঘুরে তথ্য ও ছবি সংগ্রহ করে মানুষবিহীন এ চন্দ্রযান।

পৃথিবী আর চাঁদের সাথে আর্টেমিসের সেলফি।

এরপর ফেরার পালা। রুদ্ধশ্বাসে ওরিয়নের অপেক্ষায় ছিলেন নাসার বিজ্ঞানীরা। রোববার (১১ ডিসেম্বর) প্রচণ্ড গতিতে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে ওরিয়ন। প্যারাসুটের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা হয় স্পেসক্রাফটটির গতি। স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ৪০ মিনিটের দিকে ওরিয়ন অবতরণ করে প্রশান্ত মহাসাগরে সান দিয়েগো উপকূলে।

প্রশান্ত মহাসাগরে অবতরণের আগে আর্টেমিস।

এ মিশন সম্পর্কে নাসার অ্যাডমিনিস্ট্রেটর বিল নেলসন, ৫০ বছর আগের তুলনায় এ মিশন আলাদা। তখন নির্দিষ্ট দেশ ও সরকারের উদ্যোগ ছিল। এবার অনেক আন্তর্জাতিক পার্টনার জড়িত এ প্রকল্পে। তাই এই সাফল্য কেবল আমেরিকার নয়, সব অংশীদার প্রতিষ্ঠানের।

আর্টেমিসের সেলফিতে পৃথিবী।

এদিকে, বহুল প্রতীক্ষিত আর্টেমিস-ওয়ান মিশন নিয়ে পুরোপুরি সন্তুষ্ট নাসার বিজ্ঞানীরা। এখান থেকে পাওয়া তথ্য-উপাত্ত ও ছবি বিশ্লেষণ করে পরবর্তী ধাপের প্রস্তুতি নেবে নাসা। চাঁদে নভোচারীদের অবতরণের স্থায়ী ল্যান্ডিং সাইটগুলো চিহ্নিত করবেন বিজ্ঞানীরা।

আর্টেমিসের সম্মুখভাগ।

আর্টেমিস মিশনের ম্যানেজার মাইক সারাফিন বলেন, একটি সফল মিশন যেমন হয়, এটাও ছিল ঠিক তেমনই। খুব চ্যালেঞ্জিং ছিল। তবে সবকিছুর পরও শতভাগ সাফল্য এসেছে, আমরা খুবই খুশি।

আর্টেমিসের ক্যামেরায় চাঁদের ক্রেটার।

এ প্রসঙ্গে নাসার চিফ ফ্লাইট ডিরেক্টর এমিলি নেলসন বলেন, এই মিশন আমাদের প্রত্যাশাকে ছাপিয়ে গেছে। স্পেসক্রাফটের পারফরমেন্স এতো ভালো ছিল, যে আর্টেমিস টু নিয়ে আত্মবিশ্বাস আরও বেড়ে গেলো। গত ২৫ দিন ধরে প্রতিটি মুহূর্তে ভেবেছি আরও উন্নয়ন কীভাবে করা যায়। যাতে নিরাপদ হয় নভোচারীদের যাত্রা।

প্রসঙ্গত, ১৯৬৯ সাল থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত ছয়টি অ্যাপোলো মিশনে ১২ জন নভোচারী পা রেখেছেন চাঁদের মাটিতে। এরপর মহাকাশ গবেষণা বহুদূর অগ্রসর হলেও চাঁদে আর মানুষের পা পড়েনি। পরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী বছর যাত্রা করবে আর্টেমিস টু মিশন। যাত্রীবিহীন ২য় মিশনটিও সফল হলে, ২০২৫ সালে আবার চাঁদের বুকে পা রাখবে মানুষ। ৯৩ বিলিয়ন ডলার বাজেটের এই প্রকল্পের লক্ষ্য কেবল চন্দ্র জয়ই নয়; বরং চাঁদে যাত্রাবিরতি দিয়ে মঙ্গলের বুকে বসতি গড়া।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply