জ্বিনের কথা বলে মাদরাসা ছাত্র অপহরণ, ২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবির অভিযোগ

|

বরগুনা প্রতিনিধি:

বরগুনার এক মাদরাসার ছাত্রকে অপহরণের পর ‘জ্বিনে নিয়েছে’ বলে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবির অভিযোগ উঠেছে আপন চাচী ও চাচাতো ভাইয়ের বিরুদ্ধে। পরবর্তীতে অনেক নাটকীয় ঘটনার পর এক আনসার সদস্যের সহায়তায় রাজধানীর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে উদ্ধার হয় ঐ ছাত্র।

২০২২ সালে বরগুনা সদর উপজেলার বদরখালীর বাওলকর মাদ্রাসা থেকে নিখোঁজ হয় আবু বকর। অনেক খোঁজাখুঁজির পর সন্ধান না মেলায়, তার চাচী জাহানারা, মা রাজিয়া বেগমকে জানান, জ্বিন তার ১৩ বছরের সন্তানকে নিয়ে গেছে ঝালকাঠির নেছারাবাদে। ফেরাতে প্রয়োজন ২ লাখ টাকা।

টাকা দিতে না পারায় ঝালকাঠির একটি ঘরে আটকে রাখা হয় মা রাজিয়াকেও। পরে পুলিশের সহায়তায় মেলে মুক্তি।

অথচ ফিরে আসা সেই আবু বকর জানিয়েছে সম্পূর্ণ ভিন্ন কথা। ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে তাকে ঢাকায় নিয়ে আসে চাচাতো ভাই খলিল। এরপর বাল্কহেডে বেঁধে, চালানো হয় নির্যাতন।

আবু বকর বলেন, ভাইয়ের সাথে বাজারে যাওয়ার পর সে বলে চঞ্চে বেড়ানোর কথা। পরে লঞ্চ ছেড়ে দেয়। আমি তাকে অনেকবার বলেছি আমি বাড়িতে যাব কিন্তু সে ফোন না দিয়ে হত্যার হুমকি দেয়।

সপ্তাহখানেক পর সেখান থেকে পালিয়ে সদরঘাটের পথশিশুর দলে যোগ দেয় আবু বকর। ১০ ডিসেম্বর সেখানে ডিউটিতে থাকা এক আনসার সদস্যের তাকে দেখে সন্দেহ হলে, যোগাযোগ হয় স্থানীয় থানায়। সে সূত্রে ধরে পরিচয় মেলে তার।

আনসার সদস্য কামরুল ইসলাম বলেন, তাকে দেখে টোকাই মনে হয়নি। পরে আমি তার সাথে কথা বলে জানতে পারি ছেলেটা মাদরাসায় পড়ে। পরে থানায় যোগাযোগ করে জানতে পারি ছেলেটি হারিয়ে গেছে। তাকে খোঁজা হচ্ছে।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন অভিযুক্ত খলিলের মা, জাহানারা বেগম। তিনি বলেন, এসব তাদের সাজানো ঘটনা।

এর আগে ৮ ডিসেম্বর খলিল, তার মা জাহানারা, বোন জামাই জাকারিয়া ও এক মাদরাসার শিক্ষকের বিরুদ্ধে আদালতে অপরহণের মামলা করে ভুক্তভোগী পরিবারটি।

বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলী আহম্মদ বলেন, আমরা ঢাকা থেকে আবু বকরকে উদ্ধার করেছি। তার জবানবন্দি নেয়া হয়েছে। তার মামলাটি বর্তমানে তদন্তাধীন অবস্থায় আছে।

/এনএএস


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply