ধ্বংসস্তূপে প্রাণে বাঁচতে পান করেছেন নিজের মূত্র, ভয়ানক অভিজ্ঞতা জানালেন তুর্কি তরুণ

|

হঠাৎই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়লো ছাদ, খসে গেলো পায়ের নিচের মেঝেও। মাত্র কয়েক সেকেন্ডের ভূমিকম্পে চোখের পলকে কয়েক টন কংক্রিটের নিচে। সেখানে প্রাণে বাঁচার সম্ভাবনাটুকুও ক্ষীণ। এই পরিস্থিতিতে দিনের পর দিন কীভাবে টিকে ছিলেন তুরস্ক-সিরিয়ায় ভূমিকম্পে প্রাণে বেঁচে ফেরা মানুষগুলো? সেই ভয়ানক অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন বেঁচে ফেরা এসব মানুষ। খবর এনডিটিভির।

জোরালো ভূমিকম্পে সব লণ্ডভণ্ড হয়ে হওয়ার ১০ তম দিন চলছে। এরই মধ্যে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৪২ হাজার। তবে বেঁচে ফেরা মানুষের সংখ্যাও নেহাতই কম নয়। কয়েক হাজার মানুষ এখনও চিকিৎসা নিচ্ছেন বিভিন্ন হাসপাতালে। অন্ধকার ধ্বংসস্তূপে অনাহার, আতঙ্ক, চারদিকে মরদেহ আর বাঁচার অনিশ্চয়তা। কয়েকটন ধ্বংসস্তূপের নিচে এমনই বিভীষিকাময় একেকটি মুহূর্ত কাটিয়েছেন বেঁচে ফেরা মানুষগুলো। অনেকে তো প্রিয়জনের মরদেহের পাশেই টানা কয়েক দিন ধরে আটকে ছিলেন। অনেকে আবার বেঁচে থাকার জন্য পান করেছেন নিজের প্রস্রাবও।

এমনই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন কোরকুত নামের ১৭ বছর বয়সী এক তুর্কি তরুণ। আটকে থাকার ৯৪ ঘণ্টা পর তাকে উদ্ধার করা হয়। কোরকুত বলেন, শুধু মনে আছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে আমি আটকা। ঘুটঘুটে অন্ধকারে নিজের হাত-পাও দেখতে পাচ্ছিলাম না। কতো দিন-রাত ধরে আটকা ছিলাম তাও জানি না। চিৎকার করেছি, কেউ শুনতেও পায়নি। বাঁচার জন্য বাধ্য হয়েই নিজের প্রস্রাব পান করেছি।

তিনি বলেন, আটকে যাওয়ার পর ফোন আমার কাছেই ছিল। আমি প্রতি ২৫ মিনিট পর ফোনে অ্যালার্ম দিয়ে রেখেছিলাম, যাতে ঘুমিয়ে না পড়ি। দু’দিন পর ফোনের চার্জও শেষ হয়ে যায়। একসময় আমি উদ্ধারকারীদের গলার আওয়াজ পাই। তবে আমার ভয় ছিল, তারা আমাকে শুনতে পাবে না। উদ্ধার অভিযানের কারণে ধ্বংসস্তূপে ধস নামার আশঙ্কাও করছিলেন তিনি। অবশেষে চারদিন পর তাকে ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করা হয়।

কোরকুতের মতো এমন হাজারো মানুষ ধ্বংসস্তূপে আটকে থেকে কোনোরকমে নিজেকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। দুর্যোগের ২৪৮ ঘণ্টা পরও জীবিত উদ্ধার করা হচ্ছে আটকে পড়াদের। আরও মানুষকে উদ্ধারের আপ্রাণ চেষ্টা করছেন উদ্ধারকারীরাও।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply