ওয়াগনার গ্রুপকে সরাসরি নিয়ন্ত্রণে নিতে চায় রাশিয়া, অস্বীকার ভাড়াটে দলটির

|

ভাড়াটে সেনাদল ওয়াগনার গ্রুপের সাথে রাশিয়ার দ্বন্দ্বের বিষয়টি গত কয়েক মাস ধরেই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। সশস্ত্র বাহিনীর সাথে রুশ প্রশাসনের বিভিন্ন মতানৈক্য সামনে আসছে ক্রমেই। এরই জেরে এবার ভাড়াটে এ গ্রুপের পুরো নিয়ন্ত্রণ নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে রুশ প্রশাসন। আগামী জুলাই মাসের মধ্যেই এ সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য গোষ্ঠীটিকে আল্টিমেটাম দেয়া হয়েছে। অবশ্য, দলটির প্রতিষ্ঠাতা ইয়েভগেনি প্রিগোঝিন স্পষ্ট জানিয়েছেন, সবধরনের চুক্তি বয়কট করেছে ওয়াগনার। খবর বিবিসির।

মূলত, শুরু থেকেই ইউক্রেনে চলমান সামরিক অভিযানে রুশ বাহিনীর সহায়তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে ওয়াগনার। কিন্তু গত কয়েকমাসে প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু এবং চিফ অব জেনারেল স্টাফ জেনারেল গেরাসিমভের দক্ষতা নিয়ে সরাসরি প্রশ্ন তুলেছেন ওয়াগনারের প্রতিষ্ঠাতা ইয়েভগেনি প্রিগোঝিন। তিনি অভিযোগ তোলেন, রণক্ষেত্রে দলটিকে নির্মূল করতেই পর্যাপ্ত অস্ত্র-গোলাবারুদ দেয়া হয়নি। সেই সাথে সাহায্যকারী এই দলের সদস্যদের উদ্দেশ্যেই তাদের চলার পথে বিছিয়ে রাখা হয়েছিল স্থলমাইন।

এই টানাপোড়েনের মধ্যেই সরাসরি ভাড়াটে যোদ্ধাদলটির নিয়ন্ত্রণ নেয়ার ঘোষণা দিলো পুতিন প্রশাসন। সরাসরি কোনো গ্রুপের নাম না বললেও সেনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ দমনে এ উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে বলে ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে।

এ নিয়ে রুশ প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী নিকোলাই পেনকভ বলেন, স্বেচ্ছাসেবী দলটির পরিষেবা এবং কার্যক্রম নির্ধারণে একটি চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেছেন রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী। পহেলা জুলাইয়ের আগেই প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাথে ভাড়াটে সেনাদলের যুক্ত হওয়ার বিষয়টি স্পষ্ট করবে এই নথি। এরফলে ভাড়াটে যোদ্ধারা পাবেন আইনি মর্যাদা, সরকারের সমর্থন। তাদের কাজ সুসংগঠিত করার জন্যেও পাবেন সর্বাত্মক সহযোগিতা।

জুলাইর ১ তারিখ পর্যন্ত আলটিমেটাম দেয়া হলেও এ চুক্তি ইস্যুতে বুড়ো আঙ্গুল দেখাচ্ছেন প্রিগোঝিন। রুশ সেনাবহরের তুলনায় বহুগুণে যোগ্য ওয়াগনার, এমন দাবি করে ওয়াগনার প্রতিষ্ঠাতা ইয়েভগেনি প্রিগোঝিন বলেন, রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগুর সাথে কোনো চুক্তিতে যাবে না ওয়াগনার। আমরা ভাড়াটে যোদ্ধাদল হতে পারি। কিন্তু বাহিনীটি পরিচালনা করেন দক্ষ জেনারেল-কমান্ডাররা। যুদ্ধক্ষেত্রের বিষয়ে রয়েছে গভীর অভিজ্ঞতা, কাঠামোও বেশ মজবুত। দুঃখজনক বিষয় হলো, রাশিয়ার অনেক মিলিটারি ইউনিটও এতোটা দক্ষ নয়। সমঝোতায় না গেলে বড়জোর ওয়াগনারকে অস্ত্র-গোলাবারুদ দেয়া বন্ধ করবে সরকার। তবুও এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করে আমরা নিজেদের পায়ে নিজেরাই কোপ দেবো না।

এদিকে, টানা ৮ মাসের যুদ্ধের পর ২৩ মে শিল্পনগরী বাখমুত পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণের দাবি জানায় ওয়াগনার গ্রুপ। জুনের ১ তারিখ রাশিয়ার কাছে হস্তান্তরের পরই শহরটির বেশকিছু অংশ হাতছাড়া হয়। তাতে আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন ইয়েভগেনি প্রিগোঝিন। তার বক্তব্য, ২০ হাজার সেনার মৃত্যুর পর যে সাফল্য অর্জিত হলো সেটা সামরিক কর্মকর্তাদের উদাসীনতার জন্য হুমকির মুখে পড়েছে এখন।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply