সমুদ্র থেকে ভেসে আসছে লাশ, ২০ হাজার মৃত্যুর শঙ্কা লিবিয়ায়

|

ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েলের তাণ্ডবে মৃত্যুনগরীতে পরিণত হয়েছে লিবিয়া। বিশেষ করে বন্দরনগরী দেরনার পথে পথে পড়ে আছে মরদেহ। এর আগে সাড়ে ৫ হাজার মানুষের মৃত্যু ও ১০ হাজার নিখোঁজের কথা শোনা গেলেও বুধবার স্থানীয় চিকিৎসক ও দাতা সংস্থাগুলো জানিয়েছে, মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা ২০ হাজার হতে পারে। অনেক পরিবার সমূলে নির্মূল হয়ে গেছে। সর্বত্র শোক আর আহাজারি। খবর দ্যা গার্ডিয়ানের।

কর্তৃপক্ষ বলছে, ঘূর্ণিঝড় ও বন্যায় পুরো পরিবার নিশ্চিহ্ন হয়েছে এমন ঘটনা অসংখ্য। অধিক ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলোয় পৌঁছানো কঠিন। ফলে প্রাণহানির সঠিক হিসাব পেতে সময় আরও লাগবে। দেরনা শহরের বাসিন্দা মুস্তাফা সালিম পরিবারের ৩০ জন সদস্যের মৃত্যুর খবর জানিয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো। সালিম জানান, সে রাতে লোকজন সবাই ঘুমাচ্ছিলেন। এমন একটি বিপর্যয় আসতে পারে সেটি ভাবতে পারেনি কেউ। দেরনা শহরে বেড়ে উঠা অপর এক ব্যক্তি ওয়ালিদ আবদুলাতি। বর্তমানে ত্রিপোলিতে বসবাসরত ওয়ালিদ জানতে পেরেছেন, দেরনায় থাকা তার পরিবারের বেশিরভাগ সদস্য নিখোঁজ। অনেকের মৃত্যুর খবরও নিশ্চিত হয়েছেন তিনি।

দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় প্রশাসনের বেসরকারি বিমান চলাচলবিষয়ক মন্ত্রী হিশেম আবু কিওয়াত বলেছেন, সমুদ্র থেকেও প্রতিনিয়ত ভেসে আসছে ডজন ডজন মরদেহ। যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ঘূর্ণিঝড়ে তা পুনর্গঠনে বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত লাগতে পারে।

মানবিক বিপর্যয় চরম আকার ধারণ করেছে দেরনাসহ লিবিয়ার অধিকাংশ নগরে। গৃহহীন হয়ে পড়েছে হাজার হাজার পরিবার। সুপেয় পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে সেখানে। লিবিয়ার কর্তৃপক্ষ বলছে, এ ধরনের একটি বিপর্যয় মোকাবিলা করার মতো অভিজ্ঞতা লিবিয়ার নেই। দেরনা শহরের মেয়র আকরাম আব্দুল আজিজ জানান, শহরের ২০ শতাংশ এলাকা পুরোপুরি ধ্বংস হয়েছে।

রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) গভীর রাতে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে ভেঙে পড়ে পার্বত্য এলাকায় স্থাপিত শহর রক্ষাকারী দুটি বাঁধ। প্রবল পানির তোড়ে ভেসে যায় কয়েক মাইল ধরে থাকা বহুতল ঘরবাড়ি-স্থাপনা। চলতি পথে ভাসিয়ে নেয় হাজার-হাজার মানুষকে। ধ্বংসাবশেষ নিয়ে ফেলে শহরের শেষ প্রান্তে অবস্থিত ভূমধ্যসাগরে। এই দুর্যোগে রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে ত্রিপোলি ও বেনগাজিভিত্তিক উভয় সরকার। এরইমধ্যে, যুক্তরাষ্ট্র-জার্মানি-তুরস্ক-কাতারসহ কয়েকটি দেশ সহায়তায় এগিয়ে গেছে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply