যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই ইসরায়েলের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের তৎপরতা চোখে পড়ার মতো। পরম মিত্রের পাশে দাঁড়াতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রীর পর খোদ প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও যান তেলআবিব সফরে।
ধারণা করা হয়েছিল, আরব দেশগুলোর সাথে ইসরায়েলের সম্পর্ক উন্নয়ন প্রচেষ্টার বিষয়টি মাথায় রেখেই সফরে অস্ত্রবিরতি আর গাজায় ত্রাণ সহায়তা নিয়ে আলোচনা করবেন বাইডেন। অথচ মার্কিন প্রেসিডেন্ট যখন ইসরায়েলে তখনও ব্যাপক বিমান হামলায় কেঁপে উঠেছে গোটা গাজা উপত্যকা। আট ঘণ্টার সংক্ষিপ্ত সফরে একমাত্র অর্জন ধরা হচ্ছে রাফাহ সীমান্ত দিয়ে ত্রাণবাহী ২০টি ট্রাক প্রবেশের অনুমতির আশ্বাসকে।
গাজায় আল আহলি হাসপাতালে ইসরায়েলের ভয়াবহ হামলার জেরে জর্ডানে মিসর ও ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্টের সাথে বৈঠক বাতিল হওয়ায় ইসরায়েল যাওয়ার আগেই অবশ্য ধাক্কা খেতে হয়েছে জো বাইডেনকে। তেল আবিব গিয়েও ঢালাওভাবে ইসরায়েলকে দিয়েছেন সমর্থন। বিশ্লেষকরা বলছেন, বাইডেনের এই সফর চলমান যুদ্ধে তেমন কোনো প্রভাবই ফেলবে না, বরং যুক্তরাষ্ট্রের একচোখা নীতি আরও স্পষ্ট করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির মাইকেল বার্নেট বলেন, বাইডেনের ইসরায়েল সফরের কারণে বেশ কিছু ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। যেভাবে চলমান যুদ্ধে নিজেদের চালানো আগ্রাসনে মার্কিন সমর্থনের প্রচার চালাচ্ছে ইসরায়েল, তাতে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হতে পারে।
বলা হচ্ছে, মার্কিন প্রেসিডেন্টের সফরের পরও যুদ্ধ গাজার বাইরে বিস্তৃত হলে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আরব নেতাদের দূরত্ব বাড়বে। যাতে মধ্যপ্রাচ্যে কমবে মার্কিন আধিপত্য। পুরোপুরি থমকে যাবে আরব দেশগুলোর সাথে তেল আবিবের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের প্রক্রিয়া।
মাইকেল বার্নেট আরও বলেন, সংঘাত গাজার বাইরেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। পুরোদমে পশ্চিম তীরে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়লে যুক্তরাষ্ট্রের আরব মিত্রদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়বে। এতে দেশগুলোর সাথে যুক্তরাষ্ট্রের দূরত্ব তো বাড়বেই, বরং তেল আবিবের সাথে যাদের সম্পর্ক আছে তাও ছিন্ন হতে পারে।
মধ্যপ্রাচ্যে চলমান অস্থিরতা কমাতেই বাইডেনের ইসরায়েল সফর বলা হলেও বিশ্লেষকরা বলছেন, তেল আবিবের আগ্রাসনে সংহতি জানিয়ে চলমান উত্তেজনাকে তিনি আরও উস্কে দিয়েছেন।
/এএম
Leave a reply