স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, নেত্রকোণা:
নেত্রকোণা জেলার হাওরাঞ্চলের খালিয়াজুরি উপজেলার নয়াপাড়া গ্রামের জেলে পাড়ার দুরন্তপনায় মেতে ওঠা শিশু দলের একজন হৃদয়। দেখে মনে হবে বয়স তিন বা চার। আসলে তার বয়স আট। এ অবস্থা হাওরাঞ্চলের বেশিরভাগ শিশুর।
বাড়ন্ত বয়সেও সন্তানদের শারীরিক বৃদ্ধি ঠিকভাবে না হওয়ায় দুশ্চিন্তায় অভিভাবকরা। বয়সের তুলনায় ওজন, উচ্চতা ও রক্তে হিমোগ্লোবিন কম বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। পুষ্টি ঘাটতির কারণে বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে হাওরাঞ্চলের শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ফলিত পুষ্টি গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট নেত্রকোণার আঞ্চলিক প্রধান ড. আলতাফ-উন-নাহার বলেন, মায়ের পেট থেকেই শিশুর শারীরিক এবং মানসিক বিকাশ শুরু হয়। এ ঘাটতি থেকে গেলে পরবর্তী জীবনে একটি শিশুর সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ হিসেবে গড়ে উঠার সম্ভাবনা খুব কম।
হাওরাঞ্চলের মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায়, পুষ্টিকর খাবারের গুরুত্ব জানেন তারা। যদিও তা বেশিরভাগেরই ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। তাই পুষ্টিহীনতার কথায় দুষলেন দারিদ্র্যকে।
স্থানীয়রা বলছেন, উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং কমিউনিটি ক্লিনিকে চিকিৎসক-নার্সের ঘাটতি রয়েছে। দেশ ও জাতির উন্নয়নে শিশুদের পুষ্টি নিশ্চিতের পাশাপাশি স্বাস্থ্যসেবায় নজরদারি বাড়ানোর তাগিদ তাদের।
স্থানীয় চিকিৎসকরা বলছেন, হাওরপাড়ের অর্ধেকেরও বেশি শিশু ভুগছে পুষ্টিহীনতায়। খালিয়াজুরি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আমজাদ হোসেন বলেন, হাওরাঞ্চলের মানুষদের পুষ্টিসেবা নেয়ার জন্য আর্থিক এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ হওয়ায় সমস্যাগুলো বেশি দেখা যায়।
জেলা সিভিল সার্জন সেলিম মিয়া জানান, জেলায় কম ওজনের শিশু শতকরা ২৮ ভাগ। খর্বাকৃতির ৩১ ভাগ। এছাড়া বয়সের তুলনায় কম উচ্চতা ও ওজনের শিশুর হার শতকরা ১১ ভাগ।
এএস/এনকে
Leave a reply