ক্রমেই ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অমুসলিম দেশগুলোতে বাড়ছে ক্ষোভ

|

ক্রমেই যেন বিশ্ববাসীর কাছে উন্মোচিত হচ্ছে ইসরায়েলের মুখোশ। লাগাতার বর্বরতায় ইউরোপ, আফ্রিকা ও লাতিন দেশগুলোতে ক্ষোভ বাড়ছে তেলআবিবের বিরুদ্ধে। ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থনে প্রথম দিকে মুসলিমদের আওয়াজ তুলতে দেখা গেলেও এখন ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। আগ্রাসনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছে অনেক পশ্চিমা দেশও। এমনকি অনেক দেশে খোদ ইহুদিরাই ক্ষোভ জানাচ্ছে ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে। তাদের অভিযোগ, ইহুদি ধর্মকে পুঁজি করে নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে ইসরায়েল। খবর রয়টার্স ও গার্ডিয়ানের।

শুরুর দিকে এই বিক্ষোভ কেবলমাত্র মধ্যপ্রাচ্য ও মুসলিমদেশগুলোতে চললেও বর্তমানে এই দৃশ্যটি একটু ব্যতিক্রম। ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাজ্যেও শুরু হয়েছে বিক্ষোভ, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে অংশ নিয়েছে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ। চলমান সংঘাতে ইসরায়েলের হামলায় নির্বিচারে প্রাণ যাচ্ছে নারী ও শিশুদের। হামাস নির্মূলে অভিযানের কথা বললেও তেলআবিবের এমন বর্বর আচরণে ক্রমেই সাধারণ মানুষের ক্ষোভ বাড়ছে।

আগে যারা আত্মরক্ষার অযুহাতে ইসরায়েলের হামলাকে সমর্থন দিয়েছিলেন, তাদের অনেকেই বিক্ষোভে অংশ নিয়ে গাজায় গণহত্যা বন্ধের স্লোগান দিচ্ছেন। বিশ্বের নানা প্রান্তের অমুসলিম দেশগুলোতেও ইসরায়েল বিরোধী বিক্ষোভ হচ্ছে। গাজায় অবিলম্বে গণহত্যা বন্ধের দাবি তোলার পাশপাশি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায়ও আওয়াজ তুলছেন বিক্ষোভকারীরা।

ক্ষোভ জানিয়ে বিক্ষোভকারীরা বলছেন, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের নেতারা যেভাবে ইসরায়েলের বর্বরতাকে এড়িয়ে যাচ্ছে তা খুবই লজ্জাজনক। গণহত্যাকারী ইসরায়েল দুই সপ্তাহ ধরে এই দেশটি গাজার সাধারণ মানুষের ওপর বোমা মারছে। হাজার হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ছে। এটা কোনোভাবেই যুদ্ধের সঠিক পন্থা হতে পারে না।

বিক্ষোভ ছড়িয়েছে আয়ারল্যান্ডেও। সেখানকার জনগণ বলছেন, আয়ারল্যান্ডের জনগণ অবশ্যই ফিলিস্তিনিদের সাথে আছে। একই রকমের নিপীড়নের ইতিহাস আছে আমাদেরও। সেখানে কী ঘটছে তা আমরা খুব ভালোভাবেই বুঝতে পারি।

আরব বিশ্বের বাইরে অনেক দেশের সরকারও ইসরায়েল বিরোধী জোরালো অবস্থান নিচ্ছে। তেলআবিবের বিরুদ্ধে সরব ইউরোপের যেকয়টি দেশ, তার মধ্যে অন্যতম স্পেন। নেতানিয়াহুর কঠোর সমালোচনার পাশপাশি দেশটির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়ার দাবিও তুলেছেন স্পেনের অনেক রাজনীতিবিদ। এছাড়া ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করেছে কলম্বিয়া।

স্পেনের সামাজিক অধিকার বিষয়ক মন্ত্রী লোনি বেলারা বলেন, ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ইসরায়েল যে পরিকল্পিত গণহত্যা চালাচ্ছে তার বিরুদ্ধে স্পেন সরকারের অবস্থান আরও জোরদার করতে হবে। এরজন্য আমাদের অবিলম্বে তাদের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থগিত করা দরকার। যারা এই গণহত্যার সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দিতে হবে। রাশিয়ার বিরুদ্ধে যে পদক্ষেপ নিয়েছে ইউরোপ ইসরায়েলের বিরুদ্ধেও তা নিতে হবে।

যুদ্ধ শুরুর পর ফিলিস্তিনের পক্ষে ফ্রান্সে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হলেও চাপের মুখে এখন সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে ম্যাকরন প্রশাসন।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply