গাজায় সহিংসতার ডামাডোলের মধ্যে পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের ওপর নির্যাতন শুরু করেছে ইসরায়েলিরা। শুধু সামরিক বাহিনী নয়, বেসামরিক জায়নবাদীরাও নিরস্ত্র বাসিন্দাদের উপর হামলা চালাচ্ছে। পশ্চিম তীরের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আতঙ্কিত ফিলিস্তিনিরা সরে গেলেই দখলে নেয়া হচ্ছে তাদের ভূমি। মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, সবার নজর যখন গাজায়, তখন পশ্চিম তীরেও ফিলিস্তিনি উৎখাতের মিশনে নেমেছে ইসরায়েল। খবর আল জাজিরার।
জানা গেছে, গত কয়েকদিন ধরেই দখলদাররা কালো কাপড়ে মুখ ঢেকে হামলা চালাচ্ছে গ্রামে গ্রামে। নতুন করে উচ্ছেদ করছে ফিলিস্তিনিদের, দখল করে নিচ্ছে বাড়ি-ঘর। এমনকি দিনে-দুপুরে গুলি করে হত্যা করছে এ অঞ্চলের বাসিন্দাদের।
নিরীহ এসব মানুষদের ওপর ইসরায়েলি দখলদাররা নির্যাতন চালিয়ে আসছে বহু বছর ধরেই। গাজায় চলমান সহিংসতা শুরুর পর এ প্রবণতা বেড়েছে আরও। যাতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে পশ্চিম তীরের সাধারণ ফিলিস্তিনিদের মধ্যে।
স্থানীয়রা বলছেন, বাড়িতে ঢুকে সবকিছু লুট করে নিয়ে যাচ্ছে ওরা। রাইফেল নিয়ে হামলা করছে নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের ওপর। এখন জলপাইয়ের মৌসুম হলেও গাছেই নষ্ট হচ্ছে ফলগুলো। দখলদারদের ভয়ে বাগানে যাওয়ার সাহস পাচ্ছে না কেউ। আতঙ্কিত সবাই। পুরো গ্রামে পালাক্রমে চলছে পাহারা।
বিভিন্ন মহল বলছে, সারা বিশ্বের মনোযোগ এখন গাজার দিকে। আর তারই সুযোগে ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে পুরো পশ্চিম তীরের দখল নিতে পরিকল্পিতভাবে মিশনে নেমেছে দখলদাররা। এমনকি ইসরায়েলি মানবাধিকার সংস্থা বি’টিসেলেমও বলছে একই কথা।
ফিলিস্তিনের আক্ষেপ, ভুক্তভোগী নয়, বরং দখলদারদেরই সুরক্ষা দেয় অঞ্চলটির নিরাপত্তা বাহিনী। সেই সাথে এমন বর্বর আচরণও নাড়া দেয় না পশ্চিমা বিশ্বের নেতাদের। বড় বড় শক্তির মদদেই এ আগ্রাসন চলছে বলে অভিযোগ তাদের।
এ নিয়ে ফাতাহের বিপ্লবী কমিটির সদস্য বাসাম ফুয়াদ জাকার্না বলেন, এসব কিছুই ঘটছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপের ঢালে। যা খুবই দুঃখজনক আর হতাশার। এখানে যা ঘটছে তা খুবই ভয়াক। আর কেউ যদি ভেবে থাকে যে এ ক্রাইসিস শুধু ফিলিস্তিনেরই, তাহলে তা ভুল। এগুলো প্রভাব ফেলছে সারা বিশ্বেই।
চলতি বছর পশ্চিম তীরে দখলদারদের সহিংসতা উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বেড়েছে। জানুয়ারি থেকে আগস্ট, ৮ মাসে নিজ ভূমি থেকে বিতাড়িত হয়েছেন প্রায় ৪০০ ফিলিস্তিনি।
১৯৪৮ সালে ইসরায়েল প্রতিষ্ঠার পর কমতে কমতে বর্তমানে পশ্চিম তীরের আয়তন দাড়িয়েছে মাত্র সাড়ে ৫ হাজার বর্গকিলোমিটারে। যেখানে বাস করেন ৩৩ লাখ ৪০ হাজারের বেশি মানুষ।
এসজেড/
Leave a reply