যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য নীতির অন্যতম এজেন্ডা হলো ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীকে আরও শক্তিশালী করা। সরাসরি মার্কিন সহায়তা নিয়েই বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী প্রতিরক্ষা বহর গড়ে তুলেছে ইহুদি দেশটি। ইসরায়েল রাষ্ট্রের সূচনা থেকে এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া সামরিক সহায়তার অংক দাঁড়িয়েছে ১২৪ বিলিয়ন ডলারে। চলতি বছরই দখলদার বাহিনীকে রেকর্ড ৩৮০ কোটি ডলারের সামরিক সহায়তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। খবর আল জাজিরার।
গাজায় চলমান আগ্রাসন শুরুর পরপরই ইসরায়েলের সুরক্ষায় মধ্যপ্রাচ্যে গাইডেড মিসাইল ক্যারিয়ার, এফ থার্টি ফাইভ ফাইটার জেট পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তেলআবিবের শক্তিশালী অস্ত্রভাণ্ডারকে যেন আরও সমৃদ্ধ করার দায়িত্ব নিয়েছে ওয়াশিংটন।
ইসরায়েল প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই মূলত মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কৌশল ও নীতি বাস্তবায়নে দেশটিকে ব্যবহার করছে ওয়াশিংটন। তাই ফিলিস্তিনে দখলদারিত্বে তেলআবিবকে উস্কানির পাশাপাশি ক্রমাগত সামরিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে তারা।
যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সহায়তার সবচেয়ে বড় প্রাপক হলো ইসরায়েল। ১৯৪৬ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ইসরায়েলে ১২৪ বিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ২০১৬ সালে বারাক ওবামার আমলে ১০ বছরের জন্য রেকর্ড ৩৮ বিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা চুক্তি হয় যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েলের মধ্যে। সেই বরাদ্দ থেকে চলতি বছর ওয়াশিংটনের কাছ থেকে ৩৮০ কোটি ডলারের সামরিক সহায়তা পেয়েছে তেলআবিব। এর মধ্যে ৫০ কোটি ডলার দেয়া হয়েছে মিসাইল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায়।
২০০৬ সালে মার্কিন সহায়তা নিয়েই তৈরি হয়েছিল ইসরায়েলের শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আয়রন ডোম। ইসরায়েলের তৈরি অস্ত্রের ক্রেতার তালিকায় ৪ নম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান। তেলআবিব থেকে গত চার বছরে ২১৭ মিলিয়ন ডলারের অস্ত্র কিনেছে পেন্টাগন।
২০১৮-২০২২ সালের মধ্যে কেবল যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানি থেকে অস্ত্র আমদানি করেছে ইসরায়েল। এই খাতে ব্যয় করা ২.৭ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে তিন চতুর্থাংশের বেশি অর্থাৎ ১.২ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র এসেছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে।
১৯৬৭ সালের পর অর্থাৎ ইসরায়েল যখন প্রতিবেশী আরবদের হারিয়ে পশ্চিম তীর, পূর্ব জেরুজালেম ও গাজা দখল করতে শুরু করে, তখন থেকে তেলআবিবে ওয়াশিংটনের সামরিক সহায়তা আরও বেড়ে যায়। যৌথ মহড়া, প্রযুক্তি উন্নয়ন কর্মসূচি ও প্রতিরক্ষা প্রকল্পে একসাথে কাজ করে দু’দেশ।
সামরিক সহায়তা দিলেও তা মানবাধিকার লঙ্ঘনে ব্যবহারের ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞার শর্ত দিয়ে থাকে যুক্তরাষ্ট্র। তবে ইসরায়েল যেন এসকিছুর ঊর্ধ্বে। সমগ্র গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করলেও ইসরায়েলকেই রক্ষা করে করে চলেছে যুক্তরাষ্ট্র।
এসজেড/
Leave a reply