গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের একমাস পূর্ণ হলো আজ মঙ্গলবার। এই এক মাসে দখলদার ইসরায়েলের নজিরবিহীন আগ্রাসনে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন লাখ লাখ মানুষ। পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে উপত্যকাটির দুই লাখের বেশি স্থাপনা। অস্ত্র বিরতি ইস্যুতে এখনও একমত হতে পারেনি আরব আর পশ্চিমা বিশ্ব। জরুরি ত্রাণও পৌঁছানো যাচ্ছে না। কবে থামবে এ যুদ্ধ জানে না নিরীহ ফিলিস্তিনিরা। স্বজন হারানোর বেদনা পাশ কাটিয়েই স্বাধীন হওয়ার আশায় বুক বাঁধছে তারা। এই যুদ্ধে আরব বিশ্বের নেতাদের ভূমিকা শুরু থেকেই প্রশ্নবিদ্ধ। এখনও কার্যত নীরব দর্শক তারা। খবর আল জাজিরার।
গত ৭ অক্টোবর শুরু হওয়া এই যুদ্ধে পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে গাজা উপত্যকা। গোটা অঞ্চল পরিণত হয়েছে এক মৃত্যুপুরীতে। তেলআবিবের নারকীয় অভিযানে এমনভাবে ধ্বংস হয়েছে এ উপত্যকা, যা পুনঃনির্মাণে সময় লেগে যাবে কয়েক বছর।
গাজা কার্যত মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছে ইহুদি বাহিনী। অভিযোগ, গোটা ফিলিস্তিনি জাতিকেই পৃথিবী থেকে মুছে দিতে এক নারকীয় অভিযানে নেমেছে দখলদার ইহুদি বাহিনী। সরকারি তথ্য অনুসারে, এই এক মাসে গাজায় ধ্বংস হয়েছে দুই শতাধিক স্কুল, ৮০টির বেশি সরকারি কার্যালয়, ৫৬টি মসজিদ ও ৭টি গির্জা। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২ লাখের বেশি ঘরবাড়ি। পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে অন্তত ৩২ হাজার আবাসিক ভবন। ধ্বংস হয়েছে জাতিসংঘের ৪৮টি স্থাপনা। যার মধ্যে রয়েছে শরণার্থী শিবির, আশ্রয় কেন্দ্র ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রও।
গত এক মাসে প্রাণ গেছে ১০ হাজারের বেশি মানুষের। নিহত হয়েছেন ১৭৫ স্বাস্থ্যকর্মী, ৩৪ বেসামরিক প্রতিরক্ষা কর্মী। মৃত্যু হয়েছে জাতিসংঘের ৮৮ স্বেচ্ছাসেবকের। এছাড়া আহত হয়েছেন ২০ হাজারের বেশি বাসিন্দা। সরকারি হিসাব বলছে, এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে প্রায় ১ হাজার মরদেহ।
এদিকে, গাজায় স্পষ্টত নারকীয় তাণ্ডব চললেও যুদ্ধ বন্ধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেই। অস্ত্রবিরতি ইস্যুতে এখনও বিভক্ত যুক্তরাষ্ট্র ও আরব বিশ্ব। এমনকি গাজায় জরুরি ত্রাণ প্রবেশও নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। আন্তর্জাতিক রাজনীতির হিসেব নিকেশে বলি হচ্ছে অবরুদ্ধ এ উপত্যকার নিরীহ বাসিন্দারা। কবে থামবে যুদ্ধ, কোথায় যাবেন, কিছুই জানেন না তারা।
এসজেড/
Leave a reply