যুদ্ধবিরতি শেষে আরও আগ্রাসী হয়ে উঠেছে ইসরায়েল। অবিরাম চলছে বোমাবর্ষণ। ইসরায়েলি বাহিনীর টার্গেট থেকে পালানোর কোনো জায়গা নেই বিধ্বস্ত গাজায়। জানিয়েছে টাইমস অব ইসরায়েল ও ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল।
একজন গাজাবাসী নির্বিকার স্বরে বলেন, শুরুতে বললো দক্ষিণে যেতে। এখন বলছে, আরও দক্ষিণে নয়তো সিনাইয়ে যেতে। আমরা কোথাও যাবো না। এখানেই থাকবো। যা চায় করুক। ভয়ের আর কিছু নেই। বাড়িঘর, সম্পত্তি, টাকা-পয়সা সব গেছে। ছেলেরা শহীদ হয়েছে। কান্নার আর কী বাকি আছে? আরেক ফিলিস্তিনের বক্তব্য, রাফাহতে যেতে বলছে তারা। সেখানে ১০ মিনিটে ৫০ জনকে মেরে ফেলেছে। খান ইউনিসেও তাই। যেখানেই যাবো, মৃত্যু ওৎ পেতে আছে। তাই এখানেই থাকবো। দেখা যাক, আল্লাহ আমাদের জন্য কী নির্ধারণ করে।
জিম্মিদের উদ্ধারে যতদিন প্রয়োজন অভিযান চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। আবারও হুঁশিয়ারি দিলেন হামাস নির্মুলে। গাজা জুড়ে হামলা চললেও বেসামরিকদের সুরক্ষায় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি– আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সহায়তায় নিরাপদ এলাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যেখানে গাজার বাসিন্দাদের সরিয়ে নেয়া হবে। সাধারণ মানুষের ক্ষতি করার কোনো উদ্দেশ্য আমাদের নেই। হামাসকে নির্মুল করাই আমাদের লক্ষ্য। সব জিম্মিকে ফিরিয়ে আনা, গাজা সীমান্তের নিরাপত্তা নিশ্চিতে অভিযান চালিয়ে যেতে হবে। সর্বোচ্চ শক্তিমত্তা দিয়ে লড়বো আমরা।
পাল্টা জবাবে হামাস জানিয়েছে, স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ছাড়া জিম্মিদের মুক্তির বিষয়ে কোনো আলোচনায় রাজি নয় তারা। আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত মুক্তি পাবে না আর কোনো জিম্মি। হামাসের ডেপুটি প্রধান সালেহ আল আরৌরি বলেন, শুরু থেকেই বলেছি, বিদেশি বন্দিদের কোনো শর্ত ছাড়াই ছেড়ে দিতে প্রস্তুত ছিলাম। নারী ও শিশুরাও আমাদের লক্ষ্য ছিলো না। তাদের মুক্তিও দেয়া হয়েছে। বর্তমানে বন্দিদের মধ্যে রয়েছে ইসরায়েলি সেনা ও প্রতিরক্ষা বাহিনীতে কাজ করা বেসামরিকরা। তাই আগ্রাসন পুরোপুরি বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত কোনো আলোচনা হবে না।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন বলেছেন, ইসরায়েলের নেতাদের কাছে স্পষ্ট করেছি, গাজার বেসামরিকদের সুরক্ষা নৈতিক ও কৌশলগত কারণেও গুরুত্বপূর্ণ। ইসরায়েলের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু হয়েই থাকবে যুক্তরাষ্ট্র। ইসরায়েলের নিরাপত্তার জন্য আমাদের সমর্থন সব কিছুর ঊর্ধ্বে। সেকারণেই ইসরায়েলের জনগণের সুরক্ষায় সর্বোচ্চ সহায়তা পাঠিয়েছি। ৭ অক্টোবরের মতো হামলা যাতে আর না ঘটাতে পারে হামাস।
দুই দফা সময় বৃদ্ধির পর গত বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) শেষ হয় হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির মেয়াদ। হামাসের বিরুদ্ধে শর্তভঙ্গের অভিযোগ তুলে শনিবার (২ ডিসেম্বর) মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার থেকে প্রতিনিধিদের দেশে ফিরিয়ে নিয়েছে ইসরায়েল।
/এএম
Leave a reply