আবারও ইসরায়েলি আগ্রাসনের লক্ষ্যবস্তু গাজার হাসপাতালগুলো। প্রতিদিনই এসব হাসপাতালে চলছে ভয়াবহ নৃশংসতা। শুধু একদিনের হামলায় উপত্যকায় প্রাণ গেছে প্রায় সাড়ে ৩শ’ মানুষের। গুরুতর আহত হয়েছেন সাত শতাধিক। বন্ধ হয়ে গেছে উপত্যকার প্রায় সব হাসপাতাল। যে কয়টি চালু রয়েছে, সেগুলোতেও নেই পর্যাপ্ত চিকিৎসা সরঞ্জাম। এক প্রতিবেদনে কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, শুরু থেকেই ইসরায়েলি আগ্রাসনের অন্যতম টার্গেট ছিলো গাজার হাসপাতালগুলো। একের পর এক হামলা আর জ্বালানি সংকটে যুদ্ধবিরতির আগেই ধ্বংস হয়েছে একাধিক হাসপাতাল। যেন উপত্যকার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পুরোপুরি শেষ করে দেয়ার পরিকল্পনা নিয়েই মাঠে নেমেছে ইসরায়েলি বহর।
ইসরায়েলি আগ্রাসনে দুই মাসেরও কম সময়ে গাজার হাসপাতালের সংখ্যা ৩৬ থেকে নেমে দাঁড়িয়েছে ১৮ তে। এদের মধ্যে তিনটিতে দেয়া হয় কেবল প্রাথমিক চিকিৎসা। বাকিগুলোরও সক্ষমতা নেই পুরোপুরি সেবা দেয়ার।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল কুদরা বলেন, গাজার স্বাস্থ্য পরিস্থিতি বিপর্যয়কর। বিশেষ করে উত্তর গাজায় স্বাস্থ্যসেবা বলতে কিছু আর অবশিষ্ট নেই। সব হাসপাতাল বন্ধ হয়ে গেছে। দক্ষিণ গাজার অবস্থাও শোচনীয়। ছোটো খাটো যেসব হাসপাতাল চালু রয়েছে, সেগুলোতে বড় ধরনের কোনো অপারেশন করা সম্ভব নয়।
এদিকে, হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম অবস্থা স্বাস্থ্যকর্মীদের। নেই পর্যাপ্ত ওষুধ বা চিকিৎসা সরঞ্জাম। জনবল সংকট ছাড়াও রয়েছে বিছানার অভাব। মেঝেতেই কোন রকমে দেয়া হচ্ছে চিকিৎসা সেবা।
এ প্রসঙ্গে আল নাজ্জার হাসপাতালের ব্যবস্থাপক মারওয়ান আলহামস বলেন, ইউরোপের সহায়তায় হাসপাতালগুলো অব্যাহত রয়েছে স্বাস্থ্যসেবা। তবে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেলে হিমশিম খেতে হবে আমাদের। তাছাড়া জায়গা না হওয়ায় বিপুল সংখ্যক রোগীরচাপ মোকাবেলায় প্রচন্ড সমস্যা হচ্ছে। তাই আহতদের সেবা দিতে শরণার্থী শিবিরগুলোতে ছুটে যাচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরিপ বলছে, গাজার হাসপাতাল, স্বাস্থকর্মী, অ্যাম্বুলেন্সকে লক্ষ্য করে এ পর্যন্ত ২০৩ বার হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাজায় নিযুক্ত প্রতিনিধি রিচার্ড রিপারকর্ন বলেন, যে ভাবে গাজার হাসপাতাল টার্গেট করে হামলা চালানো হচ্ছে তাতে পুরোপুরি ভেঙ্গে পড়েছে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। এরপরও থেমে নেই হামলা। অর্থহীন এই ধ্বংসযজ্ঞ এখনই বন্ধ হওয়া প্রয়োজন।
উল্লেখ্য, ফিলিস্তিনের কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, গাজায় প্রায় ৭০ শতাংশ হাসপাতালের কার্যক্রমই বন্ধ হয়ে গেছে।
/এআই
Leave a reply