রাঁচিতে ‘বাজবল’ ছেড়ে স্বভাবসুলভ ব্যাটিংয়ে রুটের সেঞ্চুরি

|

ফ্রাঞ্চাইজি যুগে ক্রিকেটে পাওয়ার হিটিংয়ের আধিপত্য বেড়েছে। সেটি একদিনের হোক কিংবা টি-টোয়েন্টি হোক। ২০ ওভারের ক্রিকেট থেকে কমে ১০ ওভার কিংবা ১০০ বলের ক্রিকেট লিগও চলছে। এর মধ্যে ইংল্যান্ড নিয়ে এসেছে ‘নতুন’ ধাঁচের টেস্ট। যেটির নাম দেয়া হয়েছে ‘বাজবল’। টেস্টে উইকেটে পড়ে থাকার চেয়ে আগ্রাসী ব্যাটিংয়েই বেশি মনোযোগ এখন ইংলিশ ক্রিকেটারদের। টেস্টেও রানের ফোয়ারা ছোঁটান ব্যাটাররা।

এই টেকনিকে প্রায় সবাই সফল হলেও জো রুট যেন নিজেকে ঠিকঠাক মেলে ধরতে পারছিলেন না। তাই ভারতে চলমান সিরিজে রান খরায় ভুগছিলেন এই ডানহাতি। সিরিজের প্রথম তিন টেস্টের ৬ ইনিংসে ব্যাট হাতে তার সর্বোচ্চ ইনিংস ছিল ২৯ রানের। যেটি তার নামের সাথে একেবারেই বেমানান। এর মধ্যেই রাজকোট টেস্টের প্রথম ইনিংসে রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে আউট হওয়ার পর পড়েছিলেন তীব্র সমালোচনার মুখে।

অবশেষে শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) রাঁচি টেস্টের প্রথম দিন বাজবল থেকে বের হয়ে এসে করলেন নিজের স্বভাবসুলভ ব্যাটিং। আর তাতেই সফল হয়েছেন তিনি। সমালোচনার জবাব দেয়ার ম্যাচে ক্রিজে দাঁত কামড়ে পড়ে থেকে তুলে নিয়েছেন নিজের ৩১তম টেস্ট সেঞ্চুরি। কয়েক ইনিংসে রান না পাওয়া রুট এজন্যই হয়তো সেঞ্চুরির পর আলাদা কোনো উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেননি। এমনকি মুখে চওড়া হাসিও দেখা যায়নি। তিন অঙ্কে পৌঁছানোর পর শুধু হেলমেট খুলে ব্যাট তোলেন জো রুট।

রুটের এই সেঞ্চুরিটা অবশ্য আরও কিছু কারণে আলাদা। ১০০ রানের ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছাতে তিনি খেলেছেন ২২৯ বল। যেটি তার ক্যারিয়ারের তৃতীয় মন্থরতম সেঞ্চুরি। ‘বাজবল’ যুগে কোনো ইংলিশ ব্যাটারের মন্থরতম ইনিংসও এটি। এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওল্ড ট্রাফোর্ডে ২০২২ সালে বেন ফোকসের ২০৬ বলে সেঞ্চুরিটি ছিল বাজবল যুগে সবচেয়ে ধীর গতির। তবে পুরো ইনিংসেই ধৈর্যের পরীক্ষা দিয়েছেন জো রুট। রিভার্স সুইপ খেলেছেন মাত্র একটি। ইনিংসে চার মেরেছেন ৯ টি। ডাবল ছিল ১১টি।

এই সেঞ্চুরির মাধ্যমে রুট গড়েছেন দুইটি স্মরণীয় রেকর্ডও। ভারতের বিপক্ষে এটি তার দশম সেঞ্চুরি। তার চেয়ে টেস্টে ভারতের বিপক্ষে বেশি সেঞ্চুরি নেই আর কোনো ব্যাটারের। ইংল্যান্ডের হয়ে সবচেয়ে বেশি ৫০ বা এর চেয়ে বড় ইনিংস খেলার রেকর্ডও (৯১ বার) এখন রুটের। ছাড়িয়ে গেছেন অ্যালিস্টার কুককে (৯০)।

রাঁচি টেস্টে শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়েছিল ইংল্যান্ড। ইন্ডিয়ান পেসার আকাশ দীপের স্বপ্নের মতো অভিষেকে ফিরিয়েছেন বেন ডাকেট, ওলি পোপ, জ্যাক ক্রলিকে। তার বোলিং তোপে মাত্র ৫৭ রানেই ৩ উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। এরপর জনি বেয়ারস্টোর সাথে ৫২ রানের জুটি গড়ে দলকে টানেন রুট।

বেয়ারস্টো ফিরে যান ৩৮ রান করে। রবীচন্দ্রন অশ্বিনকে সুইপ করতে গিয়ে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়েন বেয়ারস্টো। অধিনায়ক বেন স্টোকসও উইকেটে বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি। ৩ রান করে আউট হন জাদেজার বলে। এরপর ১১২ রানে ৫ উইকেট হারানো ইংল্যান্ডকে বিপর্যয় থেকে টেনে তোলেন রুট ও বেন ফোকস। ২৬১ বলে এই জুটিতে আসে ১১৩ রান।

শেষদিকে রবিনসনের সাথে ৫৭ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে দিন পার করেছেন রুট। সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে তিনি অপরাজিত রয়েছেন ১০৬ রানে। আর রবিনসন অপরাজিত আছেন ৩১ রানে। তাদের ব্যাটে ভর করে প্রথমদিন শেষে ইংলিশদের সংগ্রহ ৭ উইকেটে ৩০২ রান।

/এনকে


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply