প্রথমবার বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল খেলতে নেমে রীতিমতো ভুলে যাওয়ার মতো অভিজ্ঞতা হয়েছে আফগানদের। ত্রিনিদাদের ব্রায়ান লারা স্টেডিয়ামে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে মাত্র ৫৬ রানে গুটিয়ে যায় তারা। বিশ্বকাপের নকআউট স্টেজে সর্বনিম্ন রানের রেকর্ড গড়ে ৯ উইকেটে ম্যাচ হারে রশিদ খানের দল। অবশ্য ম্যাচের পরে বিশ্বকাপে অংশ নেয়া, প্রথমবারের মতো শেষ চারে পৌঁছানো কিংবা রূপকথার মতো অগ্রযাত্রার আকস্মিক ছন্দপতন-সবকিছু নিয়েই হাজির হলেন আফগান অধিনায়ক রশিদ খান।
ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে না পারার পাশাপাশি ম্যাচে নিজেদের ব্যর্থতা নিয়ে রশিদ বলেন, দল হিসেবে আমাদের জন্য কঠিন এক রাত। এর চেয়ে একটু ভালো করা আমাদের উচিত ছিল। যেভাবে খেলতে চেয়েছিলাম, কন্ডিশনের কারণে সেভাবে খেলতে পারিনি। তবে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটই এরকম। যে কোনো কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে মানসিকভাবে তৈরি থাকতে হয়। তবে তারা যেভাবে বল করেছে, তা অসাধারণ। আমরা স্রেফ ভালো ব্যাট করতে পারিনি।
তবে আসর শেষে তৃপ্তিও ভর করেছে রশিদের চোখেমুখে। পুরো আসর সম্পর্কে রাশিদের ভাষ্য, আমরা অনেক উপভোগ করেছি। সত্যি বলতে, টুর্নামেন্ট শুরুর আগে যদি বলতেন যে, আমরা সেমি-ফাইনালে উঠব এবং সেরা দলগুলির একটি দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে খেলব, তাহলে আমরা সবাই তা সাদরে গ্রহণ করতাম। সব মিলিয়ে টুর্নামেন্টজুড়ে চাপের সময়টায় আমরা নিজেদের যেভাবে সামলেছি, তাতে দারুণ খুশি আমরা। কঠিন পরিস্থিতিতেও ছেলো দারুণ সাড়া দিয়েছে। এটা আমার জন্য ছিল সন্তুষ্টির।
তিনি আরও বলেন, যেভাবে আমরা বড় দলগুলিকে হারিয়েছি এই টুর্নামেন্টে, আমাদের জন্য তা ছিল স্পেশাল। আমাদের জন্য এটা কেবলই শুরু। যে ধরনের আত্মবিশ্বাস ও ভরসা আমাদের দরকার ছিল, তা পেয়েছি। প্রক্রিয়া স্বাভাবিক রাখতে পারলে এবং নিজেদের ওপর আস্থা রাখলে আমরা যে কোনো দলকে হারাতে পারি। সব মিলিয়ে আমাদের জন্য এটা ছিল দারুণ এক টুর্নামেন্ট। আমরা অনেক কিছু শিখেছি। পরেরবার যখন আমরা এরকম একটি টুর্নামেন্টে খেলব, বিশ্বাসটা আমাদের থাকবে এবং আশা করি আরও অনেক ভালো করব আমরা।
এখনও নিজের দল নিয়ে আত্মবিশ্বাসী রশিদ। বলেন, এই টুর্নামেন্ট থেকে শিক্ষাটা আমরা নিয়ে যাচ্ছি। আমরা এখন জানি যে, স্কিল আমাদের আছে। বিশ্বাসও আছে এখন। প্রতিভাও আছে। স্রেফ চাপের সময়টায় নিজেদের ভালোভাবে সামলানোর ব্যাপার। বড় বড় দল, কঠিন সব বোলারের সামনে খেলতে হলে কীভাবে সাড়া দেব। দল হিসেবে এসব শেখার ব্যাপার আমাদের জন্য।
এই আসরের সাফল্যকে সঙ্গী করে সামনের সময়টায় নিজেদের আরও শাণিত করতে চান রশিদ। পরের বিশ্ব আসরে আরও ভালো কিছুর আশাবাদ তার কণ্ঠে। বলেন, আরও অনেক কঠোর পরিশ্রম করতে হবে আমাদের। বিশেষ করে মিডল অর্ডারে এমন কাউকে আমাদের প্রয়োজন, আগ্রাসী হওয়ার পাশাপাশি খেলাটাকে গভীরে নিয়ে যাবে যে। টপ অর্ডারের ওপর সবসময় নির্ভর করা যাবে না। দল হিসেবে সবসময়ই শিখে যেতে হবে আমাদের। দারুণ কিছু ফল আমরা এই টুর্নামেন্টে পেয়েছি। তবে আরও পরিশ্রম করে আমরা বড় টুর্নামেন্টে ফিরে এসে আরও ভালো করব।
উল্লেখ্য, ২০১০ সাল থেকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিয়মিত অংশ নিয়ে আসছে আফগানিস্তান। লাকি সেভেনে ভর করে তারা যেমন সপ্তমবারে এসে নিজেদের ইতিহাসে সেরা পর্যায়ে পৌঁছালো তেমনি সর্বনিম্ন রানের লজ্জার রেকর্ডও গড়লো। দলের একজন ব্যাটার ছাড়া কেউই স্পর্শ করতে পারেনি দুই অঙ্কের রান। ১৩ রান এসেছে অতিরিক্ত। আনলাকি থার্টিন তাদের মান কিছুটা হলেও বাঁচিয়েছে।
/এমএইচআর
Leave a reply