ভারত-বাংলাদেশ দ্বিতীয় টি টোয়েন্টি ম্যাচের ভেন্যু দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়াম। কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সের পর ভারতের দ্বিতীয় পুরনো এই স্টেডিয়ামটিতে প্রস্তুত করা হয়েছে স্পোর্টিং পিচ। এই ভেন্যুর সর্বত্র জড়িয়ে আছে দিল্লি থেকে ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করা ক্রিকেটারদের নাম।
১৩৫৪ সালের তৎকালীন দিল্লির সুলতান ফিরোজ শাহ তুঘলক যমুনা নদীর তীরে একটি নতুন শহর গড়ে তোলেন এবং সেখানেই তার প্রাসাদ গড়ে তোলেন। সেই প্রাসাদটি পরিচিত ছিলো ফিরোজ শাহ কোটলা নামে। এখনও আছে সেই দুর্গের ভগ্নাংশ। সেই প্রাসাদের পাশের দিল্লির এই স্টেডিয়ামটি নির্মান করা হয়। যার নাম শুরুতে ছিলো ফিরোজ শাহ কোটলা। তবে ২০১২ সালে দিল্লি ডিস্ট্রিক্ট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়শনের প্রেসিডেন্ট ও অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির নামে স্টেডিয়ামটির নামকরণ করা হয়। এই ভেন্যুটি ভারতের দ্বিতীয় পুরনো গ্রাউন্ড।
১৯৪৮ সালের ১০ নভেম্বর এ মাঠে প্রথম টেস্ট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম টেস্টে ভারতের প্রতিপক্ষ ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এ মাঠের প্রথম ওয়ানডেতে ভারতের প্রতিপক্ষ ছিল শ্রীলঙ্কা। ১৯৮২ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ১৯৬৫ সালে শ্রীনিবাসারাঘবন ভেঙ্কটারাঘাবন তার অভিষেক সিরিজে ৭২ রানে ৮ ও ৮০ রানে ৪ উইকেট নিয়ে একাই নিউজিল্যান্ডকে ধ্বংস্তুপে পরিণত করেছিলেন। ১৯৫২ সালে এ মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে হেমু আধিকারী ও গোলাম আহমেদ দশম উইকেটে রেকর্ড ১১১ রানের জুটি গড়েছিলেন। এখনো এ রেকর্ডটি অক্ষত রয়েছে।
১৯৮৩ সালে সুনিল গাভাস্কার এ মাঠে ডন ব্র্যাডমানের রেকর্ড গড়া ২৯তম টেস্ট সেঞ্চুরিকে স্পর্শ করেন। এই মাঠেই গাভাস্কারের গড়া ৩৫ টেস্ট সেঞ্চুরির রেকর্ড ভাঙ্গেন শচিন টেন্ডুলকার। ১৯৯৯ সালে এ মাঠেই অনিল কুম্বলে পাকিস্তানের বিপক্ষে ইনিংসে ১০ উইকেট নেয়ার কৃতিত্ব দেখান। জিম লেকারের পর দ্বিতীয় বোলার হিসেবে তিনি এ কৃতিত্ব দেখিয়েছিলেন।
এখানে এখন পযর্ন্ত হয়েছে ৭টি টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ। যার মধ্যে ভারত খেলেছে ৩টি ম্যাচ। বাকি চার ম্যাচ ছিলো ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ম্যাচ। দিল্লিতে খেলা তিন ম্যাচের মধ্যে দু’টি ম্যাচ হেরেছে ভারত। সবশেষ ২০২২ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা আর ২০১৯ সালে বাংলাদেশের কাছে হেরেছিলো স্বাগতিকরা।
বাংলাদেশের জন্য ভেন্যুটা বেশ পয়া। ২০১৯ সালে ভারতকে এই ভেন্যুতেই সিরিজের ১ম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে হারিয়েছিলো বাংলাদেশ। এরপর ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়টাও এসেছিলো এই ভেন্যুতেই। যে ম্যাচে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুউজ টাইমট আউট হয়েছিলেন অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামেই।
দিল্লিতে তৈরী করা হয়েছে স্পোর্টিং পিচ। উইকেটের ঘাস আছে অনেকটা। এখানে প্রথম ৫ ওভার পেসাররা কিছুটি সহায়তা পেতে পারে। এরপর ব্যাটাররাই রাজত্য করবে। এই ভেন্যুতে সবশেষ ২০২২ সালে যে টি-টোয়েন্টি হয়েছিলো সেখানে ২১১ রান করেও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে হেরেছিলো ভারত।
/আরআইএম
Leave a reply