তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় টোয়েন্টিতে ভারতের কাছে ৮৬ রানের বিশাল ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। বুধবার (৯ অক্টোবর) দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে নিতিশ-রিঙ্কুর ব্যাটিং তাণ্ডবে ২২১ রানের বিশাল সংগ্রহ পায় স্বাগতিকরা। এই ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে নিজেদের নতুন সর্বোচ্চ সংগ্রহের রেকর্ড গড়ে ভারত। এর আগে চলতি বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নর্থ সাউন্ডের স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে সর্বোচ্চ ১৯৬ রান তুলেছিলো মেন ইন ব্লু’রা। জবাবে নির্ধারিত ওভার শেষে ৯ উইকেটে ১৩৫ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস।
নির্দিষ্ট রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতে দেখেশুনে খেলতে থাকে দুই টাইগার ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন ও লিটন দাস। তবে ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই ছন্দপতন ঘটে। ব্যক্তিগত ১৬ রানে অর্শদীপ সিংয়ের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন ইমন। অধিনায়ক শান্তর ব্যাটও হাসেনি এদিন। মাত্র ১১ রানে ওয়াশিংটনের বলে হার্দিকের তালুবন্দি হয়ে মাঠ ছাড়েন শান্ত। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে ফিরে যান লিটনও। ১৪ রান করে বরুণ চক্রবর্তীর শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান এ ওপেনার। বিশাল টার্গেটের বিপরীতে মাত্র ৪২ রানে টপ অর্ডারের তিন ব্যাটারকে হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ।
ক্রিজে আসেন নতুন ব্যাটার তাওহিদ হৃদয়। তবে ব্যর্থ তিনিও। অভিষেক শর্মার বলে মাত্র ২ রানে ফিরে যান তিনি। এরপর মাহমুদউল্লাহকে সাথে নিয়ে ৩৪ রানের জুটি গড়েন মেহেদী মিরাজ। ইনিংসে এটিই সর্বোচ্চ পার্টনারশিপ।
একপ্রান্তে মাহমুদউল্লাহ টিকে থাকলেও উইকেটের অপরপ্রান্তে নিয়মিত উইকেট পতনে হারের শঙ্কা বাড়ার পাশাপাশি ব্যবধানও বড় হতে থাকে। মাহমুদউল্লাহর ব্যাট থেকে আসে ৪১ রান। মিডল অর্ডার ও টেলএন্ডারদের ব্যর্থতায় শেষ পর্যন্ত ১৩৫ রানে শেষ হয় বাংলাদেশের ইনিংস।
ভারতের পক্ষে ২টি করে উইকেট তুলে নেন নিতিশ ও বরুন। ১টি করে উইকেট পান অর্শদীপ, ওয়াশিংটন, অভিষেক, মায়াঙ্ক ও রিয়ান।
এর আগে, টস হেরে আগে ব্যাট করে নিতিশ-রিঙ্কুর তাণ্ডবে রানের পাহাড় গড়ে ভারত। পাওয়ার প্লের ছয় ওভারে রানের গতি কিছুটা কম থাকলেও এরপর রীতিমতো রানবন্যার উৎসব করে স্বাগতিকরা। বাংলাদেশের পক্ষে বোলিং শুরু করেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এক ওভারে ১৫ রান দেয়ায় তার পরিবর্তে তানজিম সাকিবকে বোলিংয়ে আনেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। নিজের প্রথম ওভারের শেষ বলে ওপেনার সঞ্জু স্যামসনকে সাজঘরে ফেরান তাসকিন। ব্যক্তিগত ১০ রানে শান্তর হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন সঞ্জু।
ইনিংসের তৃতীয় ওভারে বোলিংয়ে আসেন তানজিম সাকিব। তার ছোড়া ১৪৭ কি.মি গতির বলে উড়ে যায় আরেক ওপেনার অভিষেকের স্ট্যাম্প। ব্যক্তিগত ১৫ রানে সাজঘরে ফেরেন অভিষেক। পাওয়ারপ্লে’র শেষ ওভারে ভারতীয় শিবিরে তৃতীয় আঘাত হানেন মোস্তাফিজুর রহমান। শান্তর তালুবন্দি হয়ে মাঠ ছাড়েন ভারতীয় অধিনায়ক সুরিয়াকুমার।
এরপর ইনিংসের গল্পে আবির্ভাব ঘটে নিতিশ-রিঙ্কুর। দুজন মিলে গড়েন ১০৮ রানের জুটি। ব্যক্তিগত ৭৪ রানে মোস্তাফিজের বলে মিরাজের ক্যাচে পরিনত হয়ে মাঠ ছাড়েন নিতিশ। অর্ধশতক তুলে নিয়ে ব্যক্তিগত ৫৩ রানে তাসকিনের বলে জাকেরের তালুবন্দি হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন রিঙ্কুও।
হার্দিক পান্ডিয়া ও রিয়ান পরাগের ব্যাট থেকে আসে যথাক্রমে ৩২ ও ১৫ রান। শেষ পর্যন্ত ২২১ রানে থামে স্বাগতিকদের ইনিংস।
বাংলাদেশের পক্ষে ৫৫ রানের খরচায় ৩টি উইকেট তুলে নেন রিশাদ হোসেন। ২টি করে উইকেট তুলে নেন তাসকিন, তানজিম সাকিব ও মোস্তাফিজুর রহমান।
উল্লেখ্য, ৫ বছর আগে এই মাঠেই ভারতের বিপক্ষে নিজেদের একমাত্র টি-টোয়েন্টিতে জয়ের দেখা পেয়েছিলো বাংলাদেশ। এই ম্যাচ শেষে দু’দলের পরিসংখ্যানে ১৬ বারের দেখায় ১৫ বারই জিতল ভারত। আগামী ১২ অক্টোবর হায়দরাবাদের রাজিব গান্ধী আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে মাঠে নামবে বাংলাদেশ।
/এমএইচআর
Leave a reply