দেশের বিভিন্ন স্থানে বন্যায় ১৩ দিনে ৮৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমারজেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের হিসাব এবং যুগান্তরের প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে এসব জানা গেছে। জামালপুর জেলায় সবচেয়ে বেশি ২৯ জনের প্রাণহানি হয়েছে।
গাইবান্ধায় ১৫ জন, নেত্রকোনায় ১৩ জন এবং টাঙ্গাইল ও সুনামগঞ্জে পাঁচজন করে মারা গেছে। লালমনিরহাট, নীলফামারী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, কুড়িগ্রাম, শেরপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া ও ফরিদপুরে এক থেকে একাধিক জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
১০ জুলাই থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদফতরের হিসাবে পানিতে ডুবে ৭০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া সাপের কামড়ে আটজন, বজ পাতে সাতজন, আরটিআইয়ে আক্রান্ত হয়ে একজন এবং অন্য কারণে আরেকজনের মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার বন্যার পানিতে ডুবে কুড়িগ্রামের চিলমারীতে এক যুবক এবং সিরাজগঞ্জের চৌহালীতে এক স্কুলছাত্রী মারা গেছে। অপরদিকে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী ও সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে আবার বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। নাগেশ্বরীতে বন্যার পানি কিছুটা কমতে না কমতেই আবার বাড়তে শুরু করেছে।
দুই দিনের টানা বর্ষণ ও মেঘালয় থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে দোয়ারাবাজারেও আবার বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ১৯ জেলার বন্যার্তদের মানবিক সহায়তা দিচ্ছে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি। বন্যার্তদের মাঝে শুকনা খাবার, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য, হাইজিন পার্সেল, ফুড পার্সেল, তারপলিন, নগদ অর্থসহ বিভিন্ন ধরনের ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে।
সোসাইটির জাতীয় সদর দফতর থেকে বন্যার্তদের জন্য জরুরি সহায়তা হিসেবে প্রথম পর্যায়ে প্রায় এক কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সোসাইটির ডিজাস্টার রেসপন্স বিভাগ। এর মধ্যে কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলার এক হাজার পরিবারের মাঝে টাকা ও ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়।
ডিজাস্টার রেসপন্স বিভাগের পরিচালক মো. বেলাল হোসেন জানান, ডেনিশ রেড ক্রসের সহযোগিতায় সিরাজগঞ্জ জেলায় ৫০০ পরিবার, নেত্রকোনায় ৫০০ পরিবার, জামালপুরে ৭০০ এবং সুনামগঞ্জে ৮০০ পরিবারের মাঝে শুকনা খাবার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস, ফুড প্যাকেজ ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করা হবে।
মঙ্গলবার সকাল থেকে গাইবান্ধা জেলার জুবুলি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বন্যার্তদের চিকিৎসাসেবা দেয় রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল টিম। মেডিকেল টিমের প্রধান জানান, শুধু রোগীর জন্য প্রেসক্রিপশন নয়, বিনামূল্যে প্রয়োজনীয় ওষুধও সরবরাহ করা হচ্ছে।
সূত্র; যুগান্তর
Leave a reply