বিশ্বকাপের সবচেয়ে হাইভোল্টেজ কোয়ার্টার ফাইনাল আজ। রাশিয়ার কাজানে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলের মুখোমুখি হচ্ছে তারকায় ঠাসা বেলজিয়াম। ডি-ব্রুইন, হ্যাজার্ড ও লুকাকুর দলের কোচ রবারতো মারটিনেজ নিজেদেরকে আন্ডারডগ ঘোষণা করলেও, ব্রাজিল কোচ তিতে সেটি মানছেন না। এই ম্যাচে ২ হলুদ কার্ডের কারণে মিডফিল্ডার ক্যাসেমিরোর সার্ভিস পাচ্ছে না সেলেসাওরা। তবে খেলার সম্ভাবনা রয়েছে মার্সেলো ও ডগলাস কস্তার। খেলাটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত ১২টায়।
চলতি আসরে ৪ ম্যাচে সবচেয়ে বেশি ১২ গোল করা দলটির নাম বেলজিয়াম। লুকাকুর ৪ গোলসহ আরো ৭ জন স্কোরশিটে নাম লিখিয়েছেন। আর ৪ ম্যাচে সবচেয়ে কম গোল খাওয়া দুটি দলের একটি ব্রাজিল। উরুগুয়ের মত তারাও খেয়েছে মাত্র ১টি গোল।
আর তাই ২য় কোয়ার্টার ফাইনালটি পাচ্ছে টুর্নামেন্ট এর সেরা আক্রমণভাগ আর সেরা রক্ষণভাগের লড়াইয়ের তকমা। তবে সেই লড়াইয়ের আগেই ব্রাজিল বড় এক ধাক্কা খেয়েছে। দুই হলুদ কার্ডের কারণে ব্রাজিল পাচ্ছে না ক্যাসেমিরোকে। এই মিডফিল্ডার দারুণ শিল্ডিংয়ে রক্ষণের প্রাচীরকে দৃঢ় রেখেছিলেন। ফারনান্দিনহো ক্যাসেমিরোর অভাব কি পূরণ করতে পারবেন? তবে মার্সেলো ও ডগলাস কস্তার ফেরার সুখবর পাচ্ছে ব্রাজিল শিবির।
বিশ্বকাপে দু’দলের পারফরমেন্স বলছে হাড্ডা-হাড্ডি লড়াই হবে। তবে অতীত পরিসংখ্যানে এগিয়ে ব্রাজিল। দু’দলের চারবারের দেখায় তিনটিতেই জয় সেলেসাওদের। বিশ্বকাপে এক বারের লড়াইয়ে শেষ হাসি ব্রাজিলের। ২০০২ জাপান বিশ্বকাপে বেলজিয়ামকে তারা হারিয়েছিল ২-০ ব্যবধানে।
তবে লুকাকু, হ্যাজার্ড, ডি ব্রুইনদের নিয়ে গড়া এই বেলজিয়ামের গায়ে তাদের ইতিহাসের সেরা দলের তকমা। সবশেষ ৯ ম্যাচে অপরাজিত দলটি। আর শেষ ৫ ম্যাচে গড়ে ৩ গোল করেছে দলটি। বিশ্বকাপে ৩ ম্যাচে ৪ গোল করা লুকাকু এ ম্যাচেও হতে পারেন বেলজিয়ামের ত্রাতা। তবে দলটির মূল ভরসা হবেন এডেন হ্যাজার্ড।
বিপরীতে কোচ তিতের অধীনে প্রতি ম্যাচেই নিজেদের গুছিয়ে ব্রাজিল হয়ে উঠছে দুর্বার। শেষ ১৬ ম্যাচের ১৩টিতেই জয় সেলেসাওদের। বেলজিয়ামের বিপক্ষে শেষ আটের লড়াইয়ে ব্রাজিলের প্রাণভোমরা নেইমার। সাথে কুটিনিয়ো জ্বলে উঠলে হেক্সা মিশনে আরো একধাপ এগিয়ে যাবে দলটি।
এদিকে ২০০২ বিশ্বকাপের ফাইনালে জার্মানিকে ২ গোলে হারানোর পর নকআউট রাউন্ডে ইউরোপীয় দেশগুলোর কাছে টানা ৩ বার হেরেছে ব্রাজিল। ২০০৬ এ ফ্রান্স, ২০১০ এ নেদারল্যান্ডস আর ২০১৪’তে জার্মানির কাছে সাত গোলে লজ্জার হার।
আর ১৯৮৬ বিশ্বকাপের পর আবারো সেমি ফাইনালের হাতছানি বেলজিয়াম এর সামনে। সোনালী প্রজন্মটি এতটাই দারুণ যে, জাপানের বিপক্ষে ২-০’তে পিছিয়ে পড়েও ফালাইনি-চাদলিরা বদলি হিসেবে মাঠে নেমে ম্যাচ জিতিয়েছেন। ১৯৭০ সালের পর যেটি আবার দেখলো বিশ্বকাপ। তবে, বেলজিয়াম যত শক্তিধর দলই হোক না কেন, ইতিহাস বলছে বিশ্বকাপ নকআউট রাউন্ডে কখনোই দক্ষিণ আমেরিকান কোনো দেশকে হারাতে পারেনি তারা।
কোনো দলই ফেভারিট নয় জানিয়ে ব্রাজিল কোচ তিতে বলেন, টাইব্রেকারে খেলা শেষ হওয়াটা আমি কখনোই সমর্থন করি না। শুধু মাত্র ৫টা শট নিয়ে আপনি কোনো দলকে জয়ী ঘোষণা করতে পারেন না। আর দলের কথা যদি বলেন এখানে কেউই ফেভারিট না। ম্যাচের দিন যে ভালো খেলবে জয় তারই হবে। তবে নেইমার-কুটিনিয়োরা নিজেদের সেরা ছন্দে রয়েছে।
কোনো ছাড় দেয়া হবে না জানিয়ে বেলজিয়াম কোচ রবারতো মারটিনেজ বলেন, দুই দলেরই এক রকম ক্ষমতা রয়েছে। দুই দলেই একাধিক ভালো মানের খেলোয়াড় রয়েছে, যারা দলের জয়ে ভূমিকা রাখতে পারেন। আমরা এখানে আমাদের স্বপ্ন পূরণ করতে এসেছি। যদিও ব্রাজিল জানে কিভাবে বিশ্বকাপ জিততে হয়ে। তবে আমাদের পক্ষ থেকে কোনো ছাড় দেয়া হবে না।
Leave a reply