দুই ‘এলএমটেন’, আকাশি-নীলের সমুদ্র ও ৯০’র পরের সময়

|

ছবি: সংগৃহীত

চিরকাঙ্ক্ষিত বিশ্বকাপ ট্রফি নিজেদের করে নেয়া থেকে আর মাত্র দুই ধাপ দূরে দাঁড়িয়ে লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা। অন্যদিকে, টানা দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ ফাইনালে যেতে হলে সেমিতে যেন জ্বলে উঠতে না পারেন মেসি, সেদিকটাও নিশ্চিত করতে হবে ক্রোয়াটদের। তাদের দলেও আছে এক ‘এলএমটেন’, লুকা মদ্রিচ। এই দুইজন ছাড়াও গ্যালারিতে আকাশি-নীলের সমুদ্র এবং ৯০ মিনিটের পরবর্তী সময়ের খেলার সম্ভাবনা- হাইভোল্টেজ সেমিফাইনালের নির্ণায়ক বিষয় আছে বেশ কয়েকটি।

সেমিফাইনালে লিওনেল মেসির জন্য ভুলে যাওয়ার মতো এক রাত উপহার দিতে চাইবে লুকা মদ্রিচের দল। তবে, আর্জেন্টাইন এই মহাতারকাকে নিষ্প্রভ রাখার বাইরেও যে আরও অনেক কাজ আছে সেই ম্যাচে, সে বিষয়েই কথা বলেছেন ক্রোয়াট স্ট্রাইকার ব্রুনো পেতকোভিচ। পিএসজি টক ডটকমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে পেতকোভিচ বলেন, মেসিকে আটকানোর জন্য আমাদের আলাদা করে এখনও কোনো পরিকল্পনা করান হয়নি। সাধারণত আমরা নির্দিষ্ট কোনো খেলোয়াড় না, পুরো দলকে প্রতিহত করার পরিকল্পনাই করি।

মার্কিং কেমন হবে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে সেমিফাইনালে, তা নিয়েও কিছুটা ইঙ্গিত মিলেছে পেতকোভিচের কথায়। তিনি বলেছেন, ম্যান-মার্কিং না। আমরা তাদের পুরো দলকেই থামানোর চেষ্টা করবো। আর্জেন্টিনা মানেই কেবল মেসি নয়। তাদের দলে আরও বেশ কয়েকজন দারুণ মানসম্পন্ন খেলোয়াড় আছে। সম্পূর্ণ আর্জেন্টিনা দলকেই আমাদের থামাতে হবে।

আর এই কাজে ক্রোয়াটদের মিডফিল্ড ট্রায়োর সবচেয়ে নিচে খেলা মার্কো ব্রোজোভিচের ব্যস্ত সময় কাটাতে হতে পারে মেসিকে আটকাতে। ব্রাজিলের বিপক্ষে ডিফেন্সিভ ভূমিকায় দারুণ খেলা মাতেও কোভাচিচের সহায়তা এই কাজে দরকার পড়বে ব্রোজোভিচের। আর লুকা মদ্রিচের ভূমিকা হবে দলের কাজ অনুসারে। খেলার গতি নিয়ন্ত্রণ, বলের দখল রাখা এবং আক্রমণে ওঠার সময় বলের জোগান কিংবা দূরপাল্লার শটে ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দেয়া- ৩৭ বছর বয়সী মদ্রিচকে নিয়ে আর্জেন্টিনার দুশ্চিন্তার অনেক কারণই রয়েছে। আর ব্রাজিল ম্যাচে মদ্রিচ দেখিয়েছেন, তার অনেক যৌক্তিক কারণও আছে।

২০১৮ বিশ্বকাপের মতোই এবারও অতিরিক্ত সময় ও টাইব্রেকারে ম্যাচ নিয়ে গিয়ে জয়ের দেখা পাচ্ছে ক্রোয়েশিয়া। জাপান ও ব্রাজিলের বিরুদ্ধে আগে গোল খেয়েও ম্যাচে ফিরে আসে মদ্রিচের দল। তবে, দুই ক্ষেত্রেই জয়ী দলের নামটি ক্রোয়েশিয়া। অন্যদিকে, টাইব্রেকারে আর্জেন্টিনার পারফরমেন্সও খারাপ নয়। ডাচদের হারিয়ে নিজেদের স্পটকিকে দক্ষতার সাথে গোলবারের নিচে এমিলিয়ানো মার্টিনেজের রিফ্লেক্স, অনুমান ও প্রতিপক্ষের মন পড়তে পারার দক্ষতাও ভরসা জোগাচ্ছে আলবিসেলেস্তেদের।

লুসাইল স্টেডিয়ামকে আর্জেন্টিনার জন্য হোম গ্রাউন্ডই বানিয়ে ফেলেছে আকাশি-সাদা সমর্থকরা। ডাচদের বিরুদ্ধে ম্যাচে গ্যালারিতে ৪০ হাজার সমর্থক গলা ফাটিয়েছে মেসিদের জন্য। সেমিফাইনালেও তার অন্যথা হওয়ার কথা নয়। ৮৯ হাজার ধারণক্ষমতা সম্পন্ন লুসাইল স্টেডিয়ামে আবারও উঠবে আকাশি-সাদা ঢেউ। তবে এবার সেই সমর্থন কতটা কাজে লাগাতে পারে আর্জেন্টিনা, সেটা নির্ণীত হবে অনেক কিছুর উপরই। তবে ‘প্রায়’ হোম অ্যাডভান্টেজও যে কাজে লাগতে পারে, সেটা তো দেখা গেছেই বহুবার।

নকআউট পর্বে ব্রাজিল এবং জাপানকে হারিয়েই শেষ চারে জায়গা করে নিয়েছে ক্রোয়েশিয়া। অন্যদিকে, অস্ট্রেলিয়া এবং নেদারল্যান্ডসকে বিদায় করে সেমিফাইনালে এখন আর্জেন্টিনা। সেমির এই দ্বৈরথে তাই জ্বলে উঠবেন কোন নাম্বার টেন, মেসি নাকি মদ্রিচ- অনেক অনুসিদ্ধান্তের পর এই সূত্রেই নির্ধারিত হতে পারে বিশ্বকাপের ভাগ্য।

আরও পড়ুন: মেসির সাথে রেকর্ড ভাগাভাগি করতে পারাটা আমার জন্য বিরাট আনন্দের: বাতিস্তুতা

/এম ই


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply