হুংকার দিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু প্রোটিয়াদের, লঙ্কানদের হারালো ১০২ রানে

শ্রীলঙ্কাকে ১০২ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে দাপটের সাথে বিশ্বকাপ মিশনের সূচনা করলো দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রোটিয়াদের করা ৪২৮ রানে রেকর্ড সংগ্রহের জবাবে ৩২৬ রানের গুটিয়ে যায় লঙ্কানরা। পাহাড়সম লক্ষ্য তাড়া করতে নেমেও ব্যাট হাতে লড়াইটা ভালোই চালিয়েছে দাসুন শা নাকার দল।

ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে মাত্র ১ রানে ওপেনার পাথুম নিসাঙ্কাকে হারিয়ে ব্যাকফুটে চলে যায় শ্রীলঙ্কা। কুশল পেরেরা একদিকে নিষ্ক্রিয় থাকলেও ঝড় তোলেন কুশল মেন্ডিস। প্রয়োজনীয় রানরেটের সাথেই পাল্লা দিয়ে ব্যাট করছিলেন তিনি। অষ্টম ওভারে ৬৬ রানের এই জুটি ভেঙে যায় পেরেরার (৭) বিদায়ে।

ম্যাচের ১২.৪ তম ওভারে মেন্ডিস ৪২ বলে চারটি চার ও আটটি ছয়ে ৭৬ রানে ক্লেসেনের তালুবন্দী হলে লাইনচ্যুত হয় লঙ্কানরা। পরবর্তীতে চারিথ আসালাঙ্কা ও অধিনায়ক দাসুন শানাকা ফিফটি করে শ্রীলঙ্কাকে লড়াইয়ে রাখার চেষ্টা করেন। দুজনে মিলে ৮২ রান যোগ করেন ষষ্ঠ উইকেটে। আসালাঙ্কা ৬৫ বলে ৮ চার ও ৪ ছয়ে ৭৯ রান করে থামেন। 

কাসুন রাজিথার সঙ্গে অষ্টম উইকেটে ৫৮ রান যোগ শানাকা। ৬২ বলে ৬৮ রানে শানাকা ফিরে গেলে লঙ্কানদের ইনিংসের শেষ দেখে ফেলেছিলেন অনেকে। তবে রাজিথার ৩৩ রানে ভর করে তিনশ পার করে লঙ্কানরা। দলীয় ৩২২ রানে তার বিদায়ের পর মাথিশা পাথিরানাকে বোল্ড করে কাগিসো রাবাদা প্রোটিয়াদের জয় নিশ্চিত করেন। ৪৪.৫ ওভারে ৩২৬ রানে অলআউট হয় শ্রীলঙ্কা।

দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে গেরাল্ড কোয়েটজি সর্বোচ্চ তিন উইকেট নেন। দুটি করে উইকেট শিকার করেন মার্কো জানসেন, রাবাদা ও কেশভ মহারাজ।

এর আগে তিন সেঞ্চুরিতে বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ করে দক্ষিণ আফ্রিকা। লঙ্কান বোলারদের তুলোধুনো করে ৪২৯ রানের লক্ষ্য ছুড়ে দেয় তারা। কুইন্টন ডি কক, রাসি ভ্যান ডার ডুসেন ও এইডেন মার্করাম সেঞ্চুরি তুলে নেন। বিশ্বকাপে এক ম্যাচে একই দলের তিন সেঞ্চুরির ঘটনাও নতুন রেকর্ড।

শনিবার (৭ অক্টোবর) ভারতের দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে টসে হেরে ব্যাটে নামে আফ্রিকা। শুরুটা ভালো হয়নি প্রোটিয়াদের। দলীয় ১০ রানে দিলশান মাদুশাঙ্কার বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা। তিনি ফেরেন ৮ রান করে।

এরপর ডি-ককের সঙ্গে জুটি গড়েন ডুসেন। দু’জন শুরু থেকেই আগ্রাসী ব্যাটিং করেন। ১৭৪ বলে ২০৪ রানের জুটি গড়েন কক-ডুসেন। তাদের সামনে ছন্নছাড়া ছিল শ্রীলঙ্কার বোলাররা। ডি ককের আউটের পর মাঠে নেমে আরও আগ্রাসী ব্যাটিং করেন মার্করাম। মাত্র ৪৯ বলে করেছেন সেঞ্চুরি। ১৪ চার ও ৩ ছয়ে ১৯৬.২৯ স্ট্রাইক রেটে রান তুলেছেন মার্করাম। রাজিথার বলে হাঁকাতে গিয়ে মাদুশানকার তালুবন্দির মাধ্যমে মার্করাম ঝড় থামলেও মিলার ঝড়ে ঠিকই বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড নিজেদের করে নেন প্রোটিয়ারা। মিলার করেন ২১ বলে ৩৯ রান। এর আগে ২০ বলে ৩২ রান করেন হেনরিক ক্লাসেন।

এতদিন পর্যন্ত বিশ্বকাপে এক ম্যাচে সর্বোচ্চ রানের ইনিংসের রেকর্ড ছিল অস্ট্রেলিয়ার। ২০১৫ সালে পার্থে আফগানদের বিপক্ষে ৪১৭ রান তুলেছিল তারা। প্রোটিয়া ঝড়ের পর তালিকায় সর্বোচ্চ সংগ্রহের এই তালিকায় ৩ নাম্বারে চলে গেছে ভারতের নাম। ২০০৭ সালে বারমুডার বিপক্ষে ৪১৩ রান তুলেছিল তারা। পরের দুটি রেকর্ডই প্রোটিয়াদের দখলে। এত রেকর্ডের ফুলঝুরি ছোটানো দক্ষিণ আফ্রিকা এবার কি পারবে নকআউট পর্বের ফাঁড়া কাটিয়ে ‘চোকার্স’ তকমা ঘোচাতে? এই প্রশ্নের উত্তর পেতে অপেক্ষা করতে হবে বেশকিছু দিন।