ক্রিকেটপ্রেমী মানুষের কাছে বিশ্বকাপ মানেই নিজের দেশকে সর্বোচ্চ স্তরে দেখার ইচ্ছা। বিশ্বকাপ মানেই রোমাঞ্চকর আর অঘটনের ম্যাচ। এবারের আসরেও তেমনই এক অঘটনের স্বাক্ষী হয়েছে বিশ্ব। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে ৬৯ রানে হারিয়ে নতুন এক রূপকথার গল্প লিখলো আফগানিস্তান। এছাড়াও, বিশ্বকাপে আরও অনেক দলের জয়, পরাজয় ও অঘটনের স্বাক্ষী হয়েছে ক্রীড়াপ্রেমীরা। আফগান রূপকথায় স্মরণ করা যাক সেইসব অঘটনের গল্প।
১৯৯৯ সালে বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো পা রেখেছিলো বাংলাদেশ। টেস্ট প্লেয়িং নেশন হিসেবে তকমাও ছিলো না তাদের। সেই বিশ্বকাপেই পাকিস্তানকে হারিয়েছিলো টাইগাররা। নর্দাম্পটনের আগে ব্যাট করে ৯ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিলো ২২৩। জবাবে ৪৫তম ওভারে ১৬১ রানেই গুটিয়ে যায় পাকিস্তান। যদিও আগে থেকেই সেমিতে উঠে গিয়েছিলো সাকলায়েন মুশতাকদের দল।
শুধু পাকিস্তান নয়, ২০০৭ এর বিশ্বকাপে ভারতকে হারিয়েছিলো লাল-সবুজের দল। সেবার একই গ্রুপে ছিলো শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, ভারত ও বারমুডা। ১ম ম্যাচেই ১৯১ রানে অলআউট হয়েছিলো রাহুল দ্রাবিড়ের দল। জবাবে তরুণ মুশফিকের অপরাজিত ৫৬ রানে জয়ের ভিত গড়ে বাংলাদেশ। সেই হারের ধাক্কায় বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব থেকেই বাদ পড়ে টিম ইন্ডিয়া।
২০১৫ সালের বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে আসর শুরু করেছিলো আয়ারল্যান্ড। সেবার ৪ উইকেটে জিতেছিলো উইলিয়াম পোর্টারফিল্ডের আয়ারল্যান্ড। তবে এই জয়কে অঘটন মানতে নারাজ এই আইরিশ। ২৫ বল আগেই ৩০৮ রানের লক্ষ্যে পোঁছে যায় আয়ারল্যান্ড।
‘৯৯ বিশ্বকাপে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হারতে হয়েছিলো ভারতকে। গ্রুপ পর্বের ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে ২৫২ রান তুলেছিলো জিম্বাবুয়ে। কিন্তু ২৪৯ রানে সব উইকেট হারিয়ে ফেলে ভারত। ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচ জিতিয়েছিলেন হেনরি ওলোঙ্গা।
ভারত ছাড়াও সেবার তারা হারিয়েছিলো দক্ষিণ আফ্রিকাকে। আগে ব্যাট করে ২৩৩ রান করে জিম্বাবুয়ে। পরে ১৮৫ রানেই গুটিয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। সেদিন জয়ের নায়ক বনে গিয়েছিলেন ৭৬ রান করা নিল জনসন। নতুন বলে হিথ স্ট্রিককে সঙ্গী করে নাড়িয়ে দিয়েছিলেন প্রোটিয়াদের।
২০০৩ সালে বড় দলের বিপক্ষে একের পর এক অঘটন ঘটিয়েছিলো কেনিয়া। সে সময় শ্রীলঙ্কাও ছিলো বেশ শক্তিশালী দল। ২১০ রানে কেনিয়াকে আটকে দেয় লঙ্কানরা। জবাবে ১৫৭ রানে অলআউট হয়ে যায় সনাথ জয়সুরিয়ার দল।
ক্রিকেটের দুনিয়ায় আয়ারল্যান্ড মূলত পরিচিতি পায় ২০০৭ সালে পাকিস্তানকে হারিয়ে। আগে ব্যাট করে ১৩২ রানে সাজঘরের পথ দেখেন পাকিস্তানের সব ব্যাটার। ডিএল মেথডে আইরিশদের সামনে টার্গেট দাঁড়ায় ১২৭। ৩ উইকেট হাতে নিয়ে ম্যাচ জেতে আইরিশরা।
১৯৮৩ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ খেলতে নামে জিম্বাবুয়ে। প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া। অধিনায়ক ডানকান ফ্লেচারের ব্যাটে ভর করে ২৩৯ রান তোলে জিম্বাবুয়ে। উইকেট থাকলেও ২২৬ রান করে ওভার শেষ হওয়ায় হারতে হয় মাইটি অজিদের। ‘৯২ বিশ্বকাপেও জিম্বাবুয়ে অঘটনের জন্ম দেয় ইংল্যান্ডকে ৯ রানে হারিয়ে।
১৯৯৬ বিশ্বকাপে কেনিয়ার বিপক্ষে ৯৩ রানে অলআউট হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বিশ্বকাপে সেটিই ছিলো ক্যারিবিয়ানদের সব থেকে কম রানের ইনিংস। আর এই ম্যাচে আগে ব্যাট করে ১৬৬ রান করেছিলো কেনিয়া।
বিশ্বকাপের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অঘটন ঘটিয়েছিলো কপিল দেবের দল। ‘৮৩ বিশ্বকাপের ফাইনালে দুবারের চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে প্রথম বারের মতো বিশ্বকাপ জেতে ভারত। ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের মতে, সে সময় ভারতের ফাইনালে ওঠাটাও ছিলো অবিশ্বাস্য।
/এএম
Leave a reply