বাংলাদেশ ইনিংসে সর্বোচ্চ রান করেছেন অধিনায়ক শান্ত। তিনি করেছেন মাত্র ১৭ রান! তার এই রান টপকাতে পারেনি আর কোনো টাইগার ব্যাটার। উইকেটে থিতু হতে পারেননি কেউই। ক্রিজে এসেছেন আর ফিরেছেন উইকেট বিলিয়ে। সর্বোচ্চ জুটি হয়েছে ২৭ রানের। পুরো ইনিংসে ছক্কা হাঁকাতে পারেনি কোনো টাইগার ব্যাটার।
এদিন রোববার (৩১ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় ভোর ৬টায় মাউন্ট মঙ্গানুইয়ের বে ওভালে মুখোমুখি হয় নিউজিল্যান্ড ও বাংলাদেশ। টস হেরে প্রথমে ব্যাটে নামে টাইগাররা। ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ওভারের তৃতীয় বলেই টিম সাউদিকে দারুন একটা চার মারেন সৌম্য। তবে পরের বলেই আম্পায়ার্স কলে লেগ বিফোরের ফাঁদে কাটা পড়েন তিনি।
সৌম্য আউট হবার পরে দ্বিতীয় ব্যাটার হিসেবে মাঠে নামেন শান্ত। নেমেই দারুণ এক ড্রাইভে চার মারেন অধিনায়ক। খেলছিলেন আক্রমণাত্মক ভঙ্গিমায়। তবে অতি-আক্রমণাত্মক হতে গিয়ে হয়েছেন আউট।
মিলনেকে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে গিয়ে জোরের ওপর খেলতে গিয়েছিলেন টাইগার অধিনায়ক। কিন্তু নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন তিনি। ক্যাচ তুলে দেন পয়েন্টে। ১৫ বলে ১৭ রান করে থামেন তিনি। বাংলাদেশ হারায় গুরুত্বপূর্ণ আরও একটি উইকেট। ৪ দশমিক ২ ওভারে বাংলাদেশের রান তখন ৩১।
পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে উইকেট খুইয়েছেন রনিও। হৃদয়ের সঙ্গে আলোচনা করে রিভিউ না নিয়েই হাঁটা সাজঘরের দিকে হাঁটা দেন রনি। তবে রিভিউ নিলে আউটই হতেন না রনি! রিভিউতে দেখা গেছে লেগ স্টাম্প মিস করে যেত রনিকে আউট দেয়া বলটি!
নবম ওভারে পাঁচে নামা আফিফ কাঁটা পড়েন স্যান্টনারে। ১৪ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি। ইনসাইড-এজে প্যাডে লেগে ক্যাচ উঠে যায়। লুফে নেন কিউই উইকেটরক্ষক টিম সাইফার্ট। ৫৯ রানে ৪ উইকেট হারায় টাইগাররা।
আফিফের পরে হৃদয়ও ফেরেন উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে। তবে প্রথমে আউট দেননি আম্পায়ার। ফলে রিভিউ নেন অধিনায়ক স্যান্টনার, সফল হন তিনি। হৃদয়কে ফেরান ব্যক্তিগত ১৬ রানে। ১১ ওভার শেষে ৬৮ রানেই পাঁচ উইকেট হারিয়ে খাঁদের কিনারায় চলে যায় বাংলাদেশ।
মাঝে একবার জীবন পান শামীম পাটোয়ারি। উইকেটের পেছনে ক্যাচ তুলে দিলে ডাইভ দেন সাইফার্ট। তবে ধরতে পারেননি এই কিউই উইকেটরক্ষক। এদিকে উইকেটে এসে মাত্র ৪ রানেই আউট হয়ে যান শেখ মেহেদি। স্যান্টনারের তৃতীয় শিকারে ফেরেন তিনি।
হ্যাট্রিকের সুযোগ ছিল স্যান্টনারের সামনে। ১১তম ওভারের শেষ বলে ফিরিয়েছিলেন হৃদয়কে। ১৫তম ওভারের প্রথম বলেই ফেরান মেহেদিকে। কিন্তু পারেননি পরের বলে উইকেট নিয়ে হ্যাট্রিক করতে। তবে তিন বল পর ঠিকই তুলে নিয়েছেন শামীমের উইকেট। এই ওভারে দুই উইকেট নেন তিনি। বাংলাদেশ হারায় ৭ উইকেট। রান তখন ৮১।
এই রানের সাথে আর ৬ রান যোগ করে আউট হন পেসার শরিফুল। ব্যক্তিগত ৪ রানে ফেরেন তিনি। বাংলাদেশ হারায় ৮ উইকেট। তখনও ওভার বাকি চারটি। শঙ্কা জাগে শতরানের আগেই অলআউট হয়ে যাওয়ার।
তবে শতরান পেরিয়েছে টাইগার ব্যাটাররা। ৯৫ যখন বাংলাদেশের রান তখনই দারুণ এক ড্রাইভে চার মারেন দশ নম্বর ব্যাটার তানভীর ইসলাম। পরের বলে সিংগেল নিয়ে পূরণ করেন শতরানের কোটা। ওই ওভারে আসে ৯ রান।
১৯তম ওভারে আউট হয়ে যান তানভীর। ব্যক্তিগত ৮ রান করেন তিনি। বাকি থাকে আর এক উইকেট। শেষ ওভারে বোলিংয়ে আসেন মিলনে। তার দ্বিতীয় বলেই বোল্ড হয়ে যান ১০ রান করা রিশাদ। চার বল বাকি থাকতেই বাংলাদেশের রানের চাঁকা আটকে যায় ১১০-এ।
নিউজিল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ চার উইকেট শিকার করেছেন স্যান্টনার। চার ওভারে খরচ করেছেন মোটে ১৬ রান। বাকি দুইটি করে উইকেট নিয়েছেন বেন সিয়ার্স, টিম সাউদি আর এডাম মিলনে।
/এমএইচ
Leave a reply