অনেকেই তার ক্যারিয়ারের শেষ দেখে ফেলেছিলেন। বলেছিলেন, ‘বুড়ো’ হয়ে গেছে, আর চলে না। সেই ‘বুড়ো’-‘অচল’ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদে ভর করেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়ের বন্দরে ভিড়লো বাংলাদেশ। গেল কিছুদিন ধরে ভোতা হতে থাকা বাঘের নখ শেষ পর্যন্ত খানিকটা শক্তি নিয়েই আচড় কেটে দিলো সিংহের গায়ে।
ম্যাচ শেষে কোচ চন্দিকা হাথুরুসিংহের সঙ্গে হাস্যোজ্জ্বল ছবিও একটা ভিন্ন বার্তা দেয়। ইস্পাতসম মানসিকতার কোচ হিসেবে হাথুরুর ‘দুর্নাম’ বেশ পুরনো। তিনিই যখন এমন খোশমেজাজে নির্ভরতার হাত রাখেন মাহমুদউল্লার কাঁধে, তখন অনেক সমীকরণ সহজ হয়ে যায়। বলার অপেক্ষা রাখে না, ৩৮ বসন্ত পার করা এই ব্যাটার এখনও দলের অন্যতম কাণ্ডারি। যার ওপর ভরসা করা যায়, আস্থা রেখে ডাগআউটে বসে চুমুক দেয়া যায় কফির মগে।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মাত্র ১৬ রানের ইনিংসকে এক দেখায় খুব গুরুত্বপূর্ণ মনে নাও হতে পারে। কিন্তু যারা ভোরে ঘুম থেকে উঠে ডালাসের ম্যাচে চোখ রেখেছিলেন, তারা অন্তত জানেন এই ১৬ রানের মাহাত্ম্য।
অবশ্য মাহমুদউল্লাহ’র ব্যাট যে হাসবে, তার ইঙ্গিত তিনি আগেই দিয়েছিলেন। প্রস্তুতি ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে যেখানে বাংলাদেশি ব্যাটাররা উইকেটে আসা-যাওয়ার মধ্যে ছিলেন, সেখানে তিনি করেছেন ৪০ রান। বলা যায়, স্রোতের বিপরীতে বৈঠা ধরে দলকে তীরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু, স্রোতের অনুকূলে যখন বুমরাহ-আর্শ্বদ্বীপরা, সেখানে প্রতিকূলে এক মাহমুদউল্লাহ বৈঠা আর কতক্ষণই বা টেনে ধরে রাখবেন?
বিশ্বকাপে সুপার এইটে পৌঁছাতে এখনও সামনে বড় বাধা আছে কয়েকটি। প্রথমত, পরের ম্যাচেই শক্ত প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা। পরে অবশ্য সামনে আসবে নেদারল্যান্ডস আর নেপাল। দলে যেহেতু মাহমুদউল্লাহ’র মত ‘ফিনিশার’ তকমা লাগানো ব্যাটার আছে, তাই টপ-এইটে থাকার আশা করা যেতেই পারে। প্রথম ম্যাচের পর ভক্তদের এমন প্রত্যাশাকে কেউ অন্তত উচ্চাকাঙ্খা বলবেন না।
/এমএমএইচ
Leave a reply